বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে কুড়িগ্রাম হলো দারিদ্র্যের তালিকার জেলা। এই জেলার উপজেলাধীন দরিদ্র মানুষজন নিজ জেলা হতে বিভিন্ন জেলায় জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য কর্মের সন্ধানে বেরিয়ে যায়। এর মধ্যে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে কর্মের সন্ধানে ছুটে যায়।
দরিদ্র মানুষজন সুলভ মূল্যে গন্তব্যস্থানে পৌঁছাবার জন্য পরিবহনের সন্ধান খোঁজে। কুড়িগ্রামে ট্রেনের টিকিট সংকট হওয়াতে দিবানৈশ্য ঢাকাগামী বাসের উপর তারা নির্ভরশীল বেশি হয়।
কেননা কুড়িগ্রাম হতে ঢাকার উদ্দেশ্যে প্রায় দেড় শতাধিকের ঊর্ধ্বে বাস রওনা দেয়। হতদরিদ্র মানুষজনের নামিদামি বাসে টিকিট কেটে যাওয়ার মত সামর্থ্য হয় না, তাই তারা নিরুপায় হয়ে যেমন তেমন একটি গাড়ি ঢাকায় নামিয়ে দিতে পারলেই যথেষ্ট এই আশায় কুড়িগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সুলভ মূল্যে ঢাকা যাওয়ার আশায় দাঁড়িয়ে থেকে প্রহর গুনে।
এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে কতিপয় কিছু দালাল চক্র অসহায় মানুষদের গোলক ধাঁধা দেখিয়ে হেনোতেনো বাসে তুলে দিয়ে হয়রানির শিকার করে।
প্রতিদিনই দেখা যায় বাজেয়াপ্ত টিকিটগুলো সংগ্রহ করে ওই সমস্ত দালালগুলো। এরপর দরিদ্র অসহায় যাত্রীরা কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে দাঁড়ালেই তারা নামিদামি কোন গাড়ির কথা বলে তাদের হাতে একটি নামমাত্র টিকিট ধরিয়ে দেয়।
কিছু পরিবহনের অসাধু সুপারভাইজার, ড্রাইভারের মদতে দালাল গুলো এ ধরনের কাজ করার সুযোগ পায়। ঢাকার গাবতলীতে নামিয়ে দিবে এ কথা বলে গাড়িতে তুলে দেয়। পরবর্তীতে ওই সমস্ত সুপারভাইজার ও ড্রাইভাররা অসহায় যাত্রীদের গন্তব্য স্থানে নামিয়ে না দিয়ে মাঝপথে নামিয়ে দেয়, এতে করে অসহায় দরিদ্র যাত্রীগুলো বিভিন্নভাবে লাঞ্ছনা, গোঞ্জনা ও বিড়ম্বনার শিকার হয়।
কুড়িগ্রাম হতে ঢাকাগামী যাত্রী হামিদুল, আলামিন, কাশেম ও বকদুল নামে কয়েকজন যাত্রী তাদের শিশুবাচ্চা পরিবারসহ হয়রানির শিকার হয়। এ রকম অভিযোগ প্রায় শোনা যায়। এতে করে কুড়িগ্রামের মালিক পক্ষ ও শ্রমিক পক্ষের আত্মসম্মান খোয়া যাচ্ছে।
দালালদের কারণে সকালে ও রাতে ঢাকাগামী কিছু বাস কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে দাঁড়ায় যাত্রীর আশায়। এতে করে কুড়িগ্রাম জিরো পয়েন্টে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনের জন্য প্রশাসনের তেমন কোন ভূমিকা দেখা যায় না।
এতো সমস্যার একটি কারণ কুড়িগ্রামে নির্দিষ্ট নির্ধারিত কোন কোচ টার্মিনাল না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে দিবানৈশ্য কোচ কাউন্টার ও কাউন্টার বিহীন গাড়ির স্টাফ এবং যাত্রীগণ দালাল চক্রের খপ্পরে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখনই যদি এর প্রতিকার করা না হয়, তাহলে আগামীতে দালাল চক্রের কারণে আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে অসহায় যাত্রী, মালিকপক্ষ ও স্বচ্ছ শ্রমিকপক্ষ।
এ বিষয় নিয়ে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন কোচ কাউন্টার কর্তৃপক্ষ ও মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হলে তারা জানান, দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ছে অসহায় যাত্রীরা শুধু কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে। আমরাও চাই সকলেই একত্রিত হয়ে যাত্রীদের নিরাপদ আরামদায়ক ভ্রমনের জন্য এক হয়ে কাজ করি। দালাল হটাই সুশৃংখল যাত্রী সেবা প্রদান করি।
একুশে সংবাদ/জে/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :