শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ফুলহারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ব্যক্তিগতভাবে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে জমি দাতা মৃত ঈশ্বর চন্দ্র চৌকিদারের নাতি মুক্তার কোচ বাদী হয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
বাদীর লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে তথ্য সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের ফুলহারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের সময় তৎকালীণ সময়ে ফুলহারি মৌজার বিআরএস দাগ নং - ১৯৫, জমির পরিমাণ- ৫৭শতাংশ এবং একি মৌজার দাগ নং-১৯৫/৬৬১বাট্টা, জমির পরিমাণ - ৩শতাংশ, উভয় খতিয়ান নং-৭৫ সহ মোট ৬০শতাংশ জমি দান করেন ঈশ্বর চন্দ্র চৌকিদার। যাহা বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে শিক্ষা বিভাগের নামে রেকর্ডভুক্ত। অপরদিকে ওই বিদ্যালয়ের মাঠের পূর্বাংশে ১৪৫নং খতিয়ানভুক্ত ১৯৬নং দাগের রেকডিও ৭শতাংশ জমির মালিক স্বর্বেশ্বর চন্দ্র কোচ। কিন্তু উক্ত বিদ্যালয়ের জমির সীমানা নির্ধারণ না করেই বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের জমির মালিক মৃত সুরুজ্জামানের দুই ছেলে জহুরুল ইসলাম ও মোশারফ হোসেন বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ের জমির মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারি মুক্তার কোচ জানান, "আমি তাদেরকে বিদ্যালয়ের জমিতে ভবন নির্মাণের নিষেধ করলেও তারা আমার নিষেধ অমান্য করে অন্যের নামে রেকডিও ৭শতাংশ এবং সরকারি রাস্তার জমি দিয়ে বিদ্যালয়ের জমি বুঝ দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, দাতা পক্ষের উত্তরাধিকার থাকা সত্বেও আমাদেরকে ব্যবস্থাপনা কমিটিতে কোন স্থান দেয়া হয়নি"। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
বিদ্যালয়ের জমিতে ব্যক্তিগত ঘর নির্মাণের বিষয়ে ঘর উত্তোলনকারী জহুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ জায়গার পরিবর্তে স্বর্বেশ্বর চন্দ্র কোচের নামে থাকা ৭শতাংশ জমি ক্রয় করে বিদ্যালয়কে দেয়া হবে বলে জানান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজা বেগম জানান, আমি বিদ্যালয়ের জমির বিষয়টা তেমন জানতাম না। জানার পর ঘর উত্তোলনকারীদের বিরোধ নিষ্পত্তির আগে কাজ করতে নিষেধ করে দিয়েছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নুরুন নবী লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, "সরকারি সার্ভেয়ার চেয়ে ইউএনও স্যারের বরাবর আবেদন জানিয়েছি। অনুমোদন পেলে ওই বিদ্যালয় ও সরকারি রাস্তার জমি পরিমাপ করা হবে। সরকারি জমিতে ব্যক্তিমালিকানা ঘর উত্তোলণ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে কাজ বন্ধ রাখতে নিষেধ করেছি। উভয় পক্ষের কাগজপত্রাদি দেখে সরেজমিন তদন্তপূর্বক বিদ্যালয়ের সরকারি রাস্তা উদ্ধারসহ বিদ্যালয়ের সীমানা নির্ধারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা করা হবে। এতে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা বলেও জানান তিনি।
এলাকাবাসী সহ অভিযোগকারি দ্রুত তদন্তপূর্বক বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধার সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উধর্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
একুশে সংবাদ/আ.হ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :