বরিশালের উজিরপুরে অভাবের সঙ্গে নিত্য লড়াই করে চলা অদম্য মেধাবী রমজান খাঁন সাব্বিরের পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.সাখাওয়াত হোসেন।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাব্বিরকে ডেকে নিয়ে তার হাতে আর্থিক সহায়তার টাকা তুলে দেন তিনি।
জানা গেছে, উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দামোদারকাঠী গ্রামের ফিরোজ খাঁনের ছেলে সাব্বির খাঁন।
সাব্বিরের বাবা ফিরোজ খাঁনের শেষ সম্বল পৈত্রিক ১২ শতাংশ জমিতে বসতঘর করে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। সংসার চালাতে অন্যর জমিতে বর্গা চাষ করেন। অবসরে বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুরে ঘুরে লঙ্গি ও গামছা ফেরি করে বিক্রি করে সংসার চালায়। সাব্বির ছোট থেকেই মেধাবী। ২০২১ সালে হস্তিশুন্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি গৌরনদী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০২৩ সালে এইচ এসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে পাস করে সরকারি মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজে সুযোগ লাভ করে। নিয়মিত ভর্তির সময় শেষ হতে চললেও ভর্তির টাকা জোগাড় করতে পারছে না তার হত দরিদ্র্য বাবা হতাশায় ভুগছে।
মেধাবী সাব্বির বলেন, মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাবার অসচ্ছলতার কারনে শিক্ষাজীবনে কখনও প্রাইভেট পরতে পারিনি। তবুয় নিজের চেষ্টায় পড়াশুনা চালিয়ে এইচএসসিতে ভালো রেজাল্ট করি এবং ডাক্তার হবার স্বপ্নে মেডিকেল কলেজে ভর্তির আবেদন করি। বাবা কোচিং ক্লাস করার খরচ বহনে অপারগতায় প্রকাশ করলে। একমাত্র ছোটবোন উর্মির স্কুল থেকে উপহার পাওয়া এন্ড্রয়েড ফোনের সাহায্যে অনলাইনে মেডিকেল কলেজের ফ্রি কোচিং ক্লাশে অংশ নেই। আমার বাবা উপায়ন্ত না পেয়ে একটি এনজিও থেকে ৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আমার হাতে তুলে দেন। ওই টাকা দিয়ে কয়েকটি ক্লাস ও ভর্তি পরীক্ষার কাজ চালাই এবং ২০২৪ সালের মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধায় ৪৭৪১ তম হই।
এবিষয়ে সাব্বিরের বাবা ফিরোজ খাঁন বলেন, সংসার চালাতে কষ্ট হয়। ছেলে মেয়ে লেখাপড়ায় ভালো রেজাল্ট করলেও তাদের মুখে ভালো খাবার তুলে দিতে পারিনি। দোচালা টিনের ঘর মেরামতের অভাবে ফুটো হয়ে বৃষ্টির পানিতে বইপত্র ভিজে গেলেও তারা পড়াশুনা চালিয়ে গেছে। দেশবাসীর দোয়া সহযোগীতা পেলে সাব্বিরের ডাক্তার হবার স্বপ্ন পূরণ হবে।
উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সাব্বিরের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তার ভর্তির ব্যপারে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়কে সার্বিক সহযোগীতা করার অনুরোধ করা হয়েছে। লেখাপড়ায় টাকা কোনো বাধা হবে না।
একুশে সংবাদ/র.ই.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :