ময়মনসিংহের নান্দাইলে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে নিজ হাতে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়েছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে রাহিমা আক্তার মডেল একাডেমীর প্লে থেকে ৪র্থ শ্রেণীর ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা নিজেদের তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানায়।
সকালে সরেজমিন দেখা যায়, রাহিমা আক্তার মডেল একাডেমীতে নিজ হাতে তৈরি করা কাঠের তৈরি শহীদ মিনারে ফুল হাতে নিয়ে একে একে প্রবেশ করছে ছোট শিক্ষার্থীরা। কাঠের তৈরি শহীদ মিনারটি ফুল ও রঙ-বেরঙয়ের কাগজ দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙনো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’ গান গাইতে গাইতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে যান আর বেদিতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল প্লেকার্ড। আর তাতে লেখা ছিল ‘২১ আমার অহঙ্কার,‘২১ ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি, ২১ মানে মুক্তি ‘অ, আ, ক, খ ইত্যাদি।
শিক্ষার্থী ঝুমুর, আশরাফুল, বেলায়েত, জান্নাত ও মিম জানায়, আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার নাই। তাই নিজেরা কাঠ ও বাঁশ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করছি। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শুদ্ধা জানিয়েছি। আমাদের খুব ভালো লেগেছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফেরদৌসি আক্তার বলেন, আমাদের অনুপ্রেরনায় এবং ছাত্রদের প্রচন্ড আগ্রহ থেকেই শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। এটি ভাষা শহীদদের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নিলুফা আক্তার বলেন, বিদ্যালয় মাঠে ও আশপাশের ধারে কাছে কোনো শহীদ মিনার নেই। এতে প্রতিবছর মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে পারছেন না তারা।
এবার তাই শিক্ষার্থীরা মিলে শহীদ মিনারটি বানিয়েছে। তিনটি মিনার তৈরি করে রঙিন কাগজ দিয়ে জড়িয়ে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে। চারপাশে সুতার মধ্যে রঙিন কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে শহীদ মিনার এলাকা।
রাহিমা আক্তার মডেল একাডেমীর পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম হিমেল বলেন, আমরা যে ভাষায় কথা বলতে পারছি, তা সম্ভব হয়েছে ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের কারণে। তাই আমরা নিজেরাই শহীদ মিনার তৈরি করে ও বেদিতে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়েছি।
একুশে সংবাদ/আ. হ.উ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :