AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সাফ ফুটবলের সাগরিকাকে দেখতে ভাঙ্গাচোরা বাড়িতে মানুষের ভিড় !


Ekushey Sangbad
আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও
০৫:৪৪ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
সাফ ফুটবলের সাগরিকাকে দেখতে ভাঙ্গাচোরা বাড়িতে মানুষের ভিড় !

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা খেলোয়াড় এবং সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের মেয়ে মোছাম্মত সাগরিকা। তার পরিবার থাকে অন্যের জমিতে। মানুষের দেওয়া প্রায় ১০ শতাংশ জমির মধ্যে কাশঁবন, বাশেঁর বাতা আর ছাপড়া টিন দিয়ে নির্মাণ হয়েছে বাড়ী। সেই বাড়ীর ঘর হচ্ছে দুটি একটিতে থাকতেন সাগরিকা, আরেকটিতে তার ভাই সাগর। সাগরিকার বাবা, মা থাকেন তাদের চায়ের দোকানেই।

সাগরিকার তাঁর  বাড়িতে আসার খবর পেয়ে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ তাঁদের ভাঙাচোরা জরাজীর্ন বাড়িতে ছুটে আসছেন তাঁকে একনজর দেখতে।

বৃহস্পতিবার রাঙ্গাটুঙ্গি গ্রামে সাগরিকার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় সময়ই মানুষের জটলা বেঁধে থাকছে। সাগরিকার বাবা লিটন আলী জানান, গত মঙ্গলবার সকালে ট্রেনযোগে সাগরিকা বাড়িতে এসেছেন। আসার পর তাঁকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে রাঙ্গাটুঙ্গি মাঠে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় সুধীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

সাগরিকার বাড়িতে কথা হয় প্রতিবেশী আশরাফুল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এক অজপাড়ার গরিব পরিবারের মেয়ের খেলা টিভিতে দেখেছি। শুনেছি সে বাড়ি এসেছে, তাই সরাসরি দেখার জন্য তাঁর বাড়িতে ছুটে এসেছি।’

স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লব আলী,সোহেল রানা বলেন, সাগরিকারা অত্যন্ত গরিব। তারা খুব কষ্ট করে দিননিপাত করছে। অন্যের জমিতে কোন রকম বাড়ী বানিয়ে বসবাস করছে। তারা আরো বলেন, সাগরিকার জন্য আজ আমাদের গ্রাম রাঙ্গাটুঙ্গি সারা দেশের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। সাগরিকার এ অর্জন আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব। তারা সাগরিকাকে দেশের সম্পদ আখ্যায়িত করে বলেন, সরকার যদি সাগরিকার পরিবারের পাশে দাড়ান,তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ান। তাহলে সাগরিকার মত অনেক সাগরিকা ভালো খেলোয়ার হওয়ার উৎসাহ পাবেন।

সাগরিকার মা আনজু আরা বেগম বলেন, তার মেয়ে সাগরিকা যে পরিবেশে এখন থাকছে। সেই পরিবেশ তো আর তাদের বাড়ীতে নেই। তার মেয়ে অনেক সময় তার বন্ধুদের নিয়ে তাদের বাসায় আসতে চান। কিন্তু তিনি নিষেধ করেন। সাগরিকার বন্ধুরা আসলে কোথায় বসতে দিবে, আর কোথায় থাকতে দিবে তা ভেবেই তিনি সাগরিকার বন্ধুদের আসতে বাড়ন করেন। সাগরিকার মা বলছেন, সমিতির লোন করে নিজস্ব জমি কেনার চেষ্টা করছেন। কম দামে জমি পেলে তিনি ঋণ করে জমি কিনবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।

সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সাগরিকা জানান, সাফ জয়ে যেভাবে আমরা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পেরেছি। এই ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রেখে আগামীতে দেশের জন্য আরও বড় অর্জনে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।

তিনি আরও ভালো খেলতে চান। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে চান। তাঁর পরিবার যেন নিজেদের কেনা জমিতে বাড়ি করতে পারে সে সহায়তা করতে চান। এ ছাড়া তিনি রাঙ্গাটুঙ্গি খেলার মাঠের উন্নয়ন কামনা করেন। সেই সঙ্গে গ্রামের মেয়েরা যাতে ভালো খেলোয়াড় হতে পারেন সে জন্য সরকারের সহায়তা দাবি করেন।একটা সময় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের পাইপলাইন মানেই ছিল ময়মনসিংহের কলসিন্দুর উচ্চ বিদ্যালয়। এরপর সাতক্ষীরা, রাঙামাটি, কুষ্টিয়া, ঠাঁকুরগাওসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে একঝাঁক মেয়ে এসে ফুটবলে রাঙাচ্ছেন জাতীয় ও বয়সভিত্তিক দলে। সাগরিকা তাদেরই একজন। উঠে এসেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল রাঙ্গাটুঙ্গী ইউনাইটেড ফুটবল একাডেমির পরিচালক তাজুল ইসলামের হাত ধরে।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে সাগরিকার খেলা দেখে উচ্ছ্বসিত তাজুল ইসলাম, তিনি বলেন“এই মেয়েদের নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম তাতে আমি সফল, স্বার্থক। আমার মত এমন নিধিরাম সর্দারের দেশের বিজয়ে অবদান রাখার এর চেয়ে বেশি ক্ষমতা নেই। ”তাজুলদের মতো সংগঠক আছেন বলেই হয়তো চা-দোকানির সোনার মেয়েরা উঠে আসে এই পর্যায়ে। অবদান রাখে দেশের ফুটবলে।

একুশে সংবাদ/এস কে

Link copied!