AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

যশোরে অভিযানের মধ্যেও চলছে অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক


Ekushey Sangbad
ইয়ানুর রহমান, যশোর
১১:৫১ এএম, ১ মার্চ, ২০২৪
যশোরে অভিযানের মধ্যেও চলছে অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক

যশোরে স্বাস্থ্য বিভাগ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানের মধ্যে অবৈধভাবে চলছে বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। স্বাস্থ্য অধিদফতরের দশ দফা নির্দেশনা মানা হচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় প্রতিষ্ঠানে লাইসেন্সের কপি ঝুলানো হয়নি। অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানে নেই ডিগ্রিধারী চিকিৎসক-নার্স ও টেকনোলজিস্ট। নেই পর্যাপ্ত জনবল ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জরুরি প্রয়োজনীয় মেশিন। অপচিকিৎসার কবলে পড়ে শিশুসহ অনেকেই হারাচ্ছেন প্রাণ ৷ শুধু মাত্র গত কয়েকমাসে  ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, অবৈধ ক্লিনিক ও নিয়মভঙ্গকারী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুই দিনের অভিযানে ৪ টি হসপিটাল ক্লিনিক সিলগালা করাসহ ৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোর জেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি হাসপাতাল -ক্লিনিক -ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে ওঠেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের নেই অনুমোদন। যাদের আছে মেয়াদ শেষে তারাও নবায়ন করেন না। মানা হয় না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শর্ত। তারপরও বছরের পর বছর ফ্রি স্টাইলে পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া, অবৈধ ক্লিনিকগুলোর কোনোটি ক্লিনিকের লাইসেন্স নিয়ে এর সঙ্গে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কোনোটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন নিয়ে এর সঙ্গে ক্লিনিক পরিচালনা করে আসছে। আবার কোনোটি শুধু লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে সে কপি ডেস্কের সামনে ঝুলিয়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগী দেখেন সরকারি চিকিৎসকরা।

সূত্র জানায়, মাঝে মধ্যে অভিযানে প্রতিষ্ঠান সিলগালা ও জরিমানা করা হলেও কয়েকদিন পর ফের চালু হয়ে যায়। গত ১৮ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪ দিনের অভিযানে ভ্রাম্যমান আদালত ১১টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে। এগুলো হলো যশোর শহরের পালবাড়ি মোড়ের হাসিনা ক্লিনিক, ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের  আধুনিক হসপিটাল, ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের ল্যাবজোন হসপিটালের অপারেশন থিয়েটার, খাজুরার মা জেনারেল হাসপাতাল, চৌগাছা উপজেলার মধুমতি প্রাইভেট হসপিটাল, নোভা এইড, ঝিকরগাছা উপজেলার সালমা মেডিকেল সেন্টার, সালেহা ক্লিনিক, মণিরামপুরের কেসি সার্জিক্যাল এন্ড শিশু প্রাইভেট হসপিটাল, রাজগঞ্জ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পারবাজার সার্জিক্যাল ক্লিনিক, বাঘারপাড়া উপজেলার আনোয়ারা ক্লিনিক। চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, লাইসেন্সবিহীন হসপিটাল পরিচালনা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের অভিযোগে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম চলছে।

জানা গেছে, নির্দেশনা না মেনে নিজেদের ইচ্ছামতো হসপিটাল ও ক্লিনিক  গড়ে বহাল তবিয়তে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে একটি মহল। না বুঝে মানুষ সেখানে চিকিৎসার জন্য গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।  একাধিক নামমাত্র বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসাসেবায় ঝুঁকির আশংকা রয়েছে। আর এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার জন্য এসে মাশুল গুনতে হচ্ছে রোগী স্বজনদের। গত কয়েকমাসে ত্রুটিপূর্ণ অস্ত্রোপচার ও অপচিকিৎসায় শিশুসহ ৬ জন মারা গেছেন। তারা হলেন, যশোর সদর উপজেলার মুনসেফপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুস সাত্তারের মেয়ে রুনা বেগম (২৬), মুড়লি মোড়ের জোড়া মন্দির এলাকার বিপ্লব হোসেনের ছেলে ইরহাম (৪১ দিন), চাঁচড়া মধ্যপাড়ার রবিউল ইসলামের মেয়ে মীম খাতুন (১২),  চাঁচড়া মধ্যপাড়ার রবিউল ইসলামের মেয়ে মীম খাতুন (১২), ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের বামন আলী চাপাতলা গ্রামের ড্রাইভার গোলাম রসুলের স্ত্রী আসমা বেগম (৩২) ও মণিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর  আব্দুস সাত্তার মিস্ত্রির ছেলে আব্দুল মান্নান (৪০)। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতালের অরাজক অবস্থার জন্য কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার ঘাটতি আর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যত প্যাথলজি আছে, হাসপাতাল আছে সব অটোমেশিন। অনুমোদন ছাড়াই সেখানে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, কেউ যদি অসাধুভাবে কোনো ক্লিনিক হাসপাতাল খুলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তবে জরিমানা করে কোনো লাভ হবে না, জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই এর একটা উন্নতি হতে পারে। অনুমোদনহীন হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল রিপোর্ট দেওয়াসহ নানান অভিযোগ এলে টনক নড়ে সরকারের। চলে অভিযান। কিন্তু জরিমানা দিয়েই এসব প্রতিষ্ঠান আবারও শুরু করে ব্যবসা। এগুলোর লাগাম টানা এখন সময়ে দাবি। এসব প্রতিষ্ঠানে অভিজ্ঞ চিকিৎসক-নার্স-টেকনোলজিস্ট তো দূরের কথা, ভুয়া ডিগ্রির লোকজন দিয়ে এসব অবাধে চলছে কার্যক্রম।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১০ দফা নির্দেশনা ভঙ্গকারী হসপিটাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে ২ টি অভিযান চালিয়ে যশোর শহরের ঘোপ জেলরোডের উত্তরা হসপিটাল, শার্শার বুরুজবাগান ক্লিনিক , মুক্তি ক্লিনিক ও পল্লী ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অবৈধভাবে কোন হসপিটাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার সুযোগ দেয়া হবে না।

উল্লেখ্য, সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবমতে যশোর জেলায় মোট ৩০০ টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। যার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে হালনাগাদ লাইসেন্স নেই।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!