AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

পরকিয়া প্রেমে খুন হন মাফিজুল; ২০ মাস পর মিলল মরদেহের খোঁজ


পরকিয়া প্রেমে খুন হন মাফিজুল; ২০ মাস পর মিলল মরদেহের খোঁজ

নাটোরের গুরুদাসপুরে পরকীয়া প্রেমের জেরে খুন হয়েছিলেন মাফিজুল ইসলাম (২৮) নামের এক ব্যাক্তি। দীর্ঘ ১৮ মাস পরে নিহত ব্যক্তির মরদেহের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। একটি বালিকা মাদরাসার টয়লেটের মেঝেতে পুঁতে রাখা মরদেহটি উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন পুলিশ।

এঘটনায় শুক্রবার রাতে চারজনকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের মা মাহিনুর বেগম। হত্যাকাণ্ডের শিকার মাফিজুল ইসলাম গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় খলিফা পাড়া মহল্লার আজাদ প্রামাণিকের ছেলে। তিনি পেশায় রঙ মিস্ত্রি ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে গৃহবধূ তানজিলা (৩৫) ও তার পিতা নৈশ্যপ্রহুরী তাহের খলিফা (৬৫), সাবেক স্বামী আল—হাবিব (৩৯) ও পরকীয়া প্রেমিক আশরাফুলকে (৪৫) পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে পালানোর সময় আসামি আশরাফুলকে বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা থেকে শনিবার সকালে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এসময় তার কাছ থেকে দুটি পাসপোর্ট, দুটি মোবাইল ও একটি চেক বই জব্দ করা হয়।

আশরাফুল পৌর সদরের খামারনাচকৈড় মহল্লার আব্দুস সামাদের ছেলে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে— প্রায় ১৫ বছর আগে তানজিলা তার স্বামী আল—হাবিবকে সঙ্গে নিয়ে আপন ছোটভাই সবুজকে (১০) খুন করেছিলেন। ওই মামলায় আল—হাবিব জেলহাজতে থাকা অবস্থায় আশরাফুলের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে যান তানজিলা। স্থানীয় একটি বেকারীতে চাকুরি করার সুবাদে মাফিজুলের সাথে আবারো পরকীয়ার সম্পর্ক গড়েন তিনি। মাফিজুলের সাথে প্রেমের বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষিপ্ত হন আল—হাবিব ও শ্বশুড় তাহের খলিফা ও পরকীয়া প্রেমিক আশরাফুল।

আল—হাবিব জামিনে বেরিয়ে এলে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল তানজিলা পরকীয়া প্রেমিক মাফিজুলকে চাঁচকৈড় পুড়ানপাড়ায় তার পিতার বাড়িতে ডেকে নেন। একপর্যায়ে তানজিলা, তার স্বামী আল—হাবিব, পিতা তাহের খলিফা এবং প্রেমিক আশরাফুলের সহযোগীতায় মাফিজুলকে শ্বাসরোধে এবং বুকের ওপর শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। রাতেই বাড়ির পাশের চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদরাসার নির্মাণাধীন টয়লেটের মেঝের বালু খুঁড়ে সেখান মরদেহ পুঁতে রাখা হয়।

তানিজলার পিতা ওই মাদরাসার নৈশ্যপ্রহুরী। এঘটনায় নিহত মাফিজুলের পরিবারের পক্ষ থেকে ২০২২ সালের ৭ মার্চ গুরুদাসপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করা হয়।

পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডের পর গত বছর তানজিলার সাথে স্বামী আল—হাবিবের বিচ্ছেদ ঘটে। একপর্যায়ে তানজিলার দায়ের করা যৌতুকের মামলায় আবারো জেলহাজতে যান আল—হাবিব। জেলহাজতে থাকা অবস্থায় আল—হাবিব গুরুদাসপুরের এক ব্যক্তির কাছে মাফিজুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শুক্রবার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। একপর্যায়ে আসামিদের সাহায্যে মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে মাদরাসাটিকে ঘিরে উৎসুখ মানুষের ভিড় পড়ে। তবে শুক্রবার রাত থেকেই চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদরাসায় পুলিশ প্রহাড়া বসানো হয়েছে। মরদেহটি উত্তোলণের জন্য আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ।

মামলার বাদি মাহিনুর বেগম বলেন— তানজিলা তার ছেলের সাথে গুরুদাসপুরের মাহি বেকারিতে চাকুরি করতেন। কিন্তু আসামি আশরাফুলের সাথে আগে থেকেই তানজিলার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একারণে পরিকল্পীতভাবে তার ছেলে মাফিজুলকে রাতের বেলা বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছেন আসামিরা। তিনি আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

স্থানীয় কাউন্সিলর শেখ ফরিদ বলেন— মাফিজুলের সাথে তানজিলার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় ক্ষিপ্ত ছিলেন পরকীয়া প্রেমিক আশরাফুলও। মূলত পরিকল্পীতভাবে মাফিজুলকে খুন করেছেন আসামিরা।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন বলেন— যেখানে মরদেহটি পুঁতে রাখা হয়েছে, সেখানে পুলিশ প্রহাড়া বসানো হয়েছে।

সিংড়া—গুরুদাসপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আক্তারুজ্জামান বলেন— মামলা রজুর ২৪ ঘন্টার মধ্যে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করেছেন। পুলিশ হেফাজতে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আদালতের নির্দেশে আজ রবিবার মরদেহটি উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হবে।


একুশে সংবাদ/জ.প.প্র/জাহা
 

Link copied!