ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বেওয়ারিশ কয়েকটি কুকুরের কামড়ে গত দুই দিনে ১৫ শিশুসহ কমপক্ষে ১৮ জন আহত হয়েছেন। শনিবার ও রবিবার বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। আহত সবাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই পৌরসভার বাসিন্দা বলে জানা গেছে,আহত ১৫ শিশুর বয়স ১০-এর নিচে। এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, লাল, সাদা ও হলুদ রঙের একটি কুকুর গত শনিবার বিকালে পৌরসভার পশ্চিম দাপুনিয়া মহল্লার পায়েল আহম্মেদের ছেলে রাফিকে (৫) বাড়ির সামনে খেলার সময় হঠাৎ আক্রমণ করে কামড়ে দেয়। এ সময় তার ঘাড়-পিঠ রক্তাক্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর পরপরই এক ঘণ্টার ব্যবধানে আরো ৮ জন কুকুরের কামড়ে আহত রোগী জরুরি বিভাগে আসে। তাদের মধ্যে ১০ বছর বয়সের ফাতেমা খাতুন ৫ বছর বয়সের জিনিয়া ও ৩০ বছর বয়সের রুনা আক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ময়মনসিংহ এসকে হাসপাতালে যায়। পরে আরো রোগী এলেও তাদের নাম জানা যায়নি।
শনিবার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বে ছিলেন ডা. মৌপ্রিয়া মজুমদার। তিনি জানান, ৯ জন রোগী জরুরি বিভাগে এলে তাদের চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হয়। আহতদের মধ্যে সবাইকেই এন্টি র্যাবিট ভ্যাকসিন দিয়ে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে (এসকে) স্থানান্তর করা হয়। এছাড়াও রবিবার দুপুরের পর থেকে জরুরি বিভাগে আহত অবস্থায় আসে ৯ জন। তারা হলেন- আছমা বেগম (৪৪), আরিয়ান (৪), সিয়াম (৩), জায়েন (৫), সাইদ (৮), কৃষ্ণ (৪), অরুণ্য সরকার (৭) রফিক (৬) ও শিমুল (৬)। তারা সবাই পৌরসভার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। আহতদের সবাইকেই কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ফারজানা বিনতে মজিদ জানান, আহতদের মধ্যে শিশুদের অবস্থা খুবই খারাপ। সবাইকেই এন্টি র্যাবিট ভ্যাকসিন দিয়ে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এলাকার লোকজন জানায়, ইতিপূর্বে এমন ঘটনা ঘটেনি। গত দুই দিন ধরে অবাধে কামড়ালেও কারো কোনো হস্তক্ষেপ নেই। এতে আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় চলাফেরা করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ জানান, কুকুর মারতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। তাই আমাদের নির্দেশ দিলে আমরা শুট (গুলি) করে মেরে ফেলতে পারি। জানতে চাইলে গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম একুশে সংবাদকে জানান, একাধিক কুকুরে কামড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে জনতা তিনটিকে মেরে ফেলেছেন। উচ্চ আদালতের নিষেধ থাকায় পৌরসভা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কুকুর মারা যাচ্ছে না, তারপরও আতঙ্কগ্রস্ত হয়েই জনগণ মারার উদ্যোগ নিয়েছে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :