শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জাজিরা ক্যান্টনমেন্ট-গণিরমোড় সংযোগ সড়কে মাত্র সাত দিনেই রাস্তা ফেটে চৌচির, উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। ফলে সংস্কার শেষ না হতেই দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন পথচারীরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ সড়কটি সংস্কারের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই সড়কের সংস্কার ব্যয় বাজেট ৪ কোটি টাকা। সড়কটির সংস্কার কাজ করছেন মোহাম্মদ ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লি. এর পক্ষের প্রতিনিধি জনাব রাশেদ উজ্জামান। তিনি শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। এ প্রকল্পের ব্যয় হিসেবে এপর্যন্ত ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা উঠিয়ে নিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
গত বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির খান মার্কেট থেকে গনির মোড় এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। যেসব স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে সেসব স্থানে উপজেলা প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের উপস্থিতিতে নতুন করে আবারও কার্পেটিং করা হচ্ছে।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, "ঠিকাদার সড়কটির কার্পেটিং করার সময় পুরনো ইট খোয়া ও নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়াও সড়কটি সংস্কারের সময় সঠিকভাবে রোলিং ও মজবুতিকরণ না করে তড়িঘরি করে কাজ শেষ করেছে। ফলে সপ্তাহ না যেতেই কার্পেটিং উঠে গিয়ে আগের মতো খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।"
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জনাব শাহ আলম বলেন, "সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার ৭দিন পর সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ৬ মাস পর সড়কটি ফের খানা খন্দে একাকার হবে। সরকারের অর্থ ব্যয় হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে না।"
এ সড়কের সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জমাব রাশেদ উজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। কতদিন আগে এ সড়কের কার্পেটিং শেষ হয়েছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে। এর মধ্যেই কার্পেটিং উঠে গেলো কেন জানতে তাইলে তিনি সাংবাদিকদের নিউজ করতে নিষেধ করেন এবং সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন।
এবিষয়ে জাজিরা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) জনাব মোঃ ইমন মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি কাজে গাফিলতির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, যেসব জায়গায় কার্পেটিং উঠে গেছে তা ঠিক করে দেওয়া হবে। নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম জনাব রাফেউল ইসলাম বলেন, "বিষয়টি শুনে আমি নিজেই সড়কটি পরিদর্শন করেছি। ঐ সড়কের ব্যবহৃত বিটুমিন আমরা পরীক্ষা করেছি। তা ঠিক আছে। এখন যে সমস্যাটি হয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে যে কার্পেটিং করা হয়ে তা উঠিয়ে সড়কের একপাশ বন্ধ করে নতুন করে আবার কার্পেটিংয়ের ব্যবস্থা করবো।
একুশে সংবাদ/ক.জ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :