একমাত্র ছেলে আলোকচিত্রী প্রিয়ককে হারিয়ে বিশাল বাড়িতে একাকী দিন পার করছেন প্রিয়কের মা ফিরোজা বেগম। নেপালে বিমান দুর্ঘটনার পর একমাত্র ছেলে আর নাতনিকে হারিয়ে পুরোপুরি একা হয়ে পড়েছেন তিনি। ঘরের পাশে কবর দিয়েছেন ছেলে এবং নাতনির, যেন সারাদিন দরজায় বসে তাদের কবর দেখতে পারেন।
স্থাবর—অস্থাবর সব সম্পত্তি এখন বিলিয়ে দিচ্ছেন মসজিদ মাদ্রাসা ও এতিমখানা নির্মাণে। কারণ ভবিষ্যৎ বংশধর তো কেউ নেই কার জন্য রেখে যাবেন এই সম্পদ। দুর্ঘটনার পর এভাবেই চলছে প্রিয়কের মা ফিরোজা বেগমের জীবন।
এফ এইচ প্রিয়ক গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ২নং গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামের মৃত সরাফত আলীর একমাত্র ছেলে, ২০১২ সালে সরাফত আলী ক্যান্সারজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেন। স্বামীকে হারিয়ে একমাত্র ছেলেকে ধরে বেচে ছিলেন ফিরোজা বেগম সেই সুখও তার কপালে আর সইলো না।
প্রিয়কের খুব কাছের একজন বন্ধু সোহানুর রহমান (সোহাগ) বলেন, এফ এইচ প্রিয়ক ভাই আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোকচিত্রী । অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ ছিলেন। এক সময় কবিতা লিখতেন। হঠাৎ করেই ছবি তোলাকে পেশা করে নিলেন। সৃষ্টিশীল এ মানুষের ছবি তোলার প্রধান বিষয় ছিলো মানুষ, মানুষের জীবন মানুষকে পড়তেন সূক্ষ্মভাবে। ছবির কারিগর` কিংবা `ক্যামেরার কবি` বলেই তাঁকে ডাকা হতো। এ নামগুলোই তাঁর প্রধান পরিচয়। ছবির কারিগর ২০১৮ সালের ১২ মার্চ তিন বছরের কন্যা তামাররাকে নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স এর বিমান দুর্ঘটনায় পাড়ি জমালেন অন্যজগতে। এ চিরসত্য হলেও মেনে নিতে পারছিনা। একসাথে তো আরো অনেক বছর চলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
২০১৮ সালের ১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডু ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশের ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান। সেই দুর্ঘটনায় বিমানের মোট ৫১ জন যাত্রী নিহত হন। ২০ জন প্রাণে বেঁচে গেলেও তাদের অনেকের আঘাত ছিল গুরুতর।
একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :