উৎপাদন বৃদ্ধি কিন্তু চাহিদা কম এ প্রেক্ষিতে নাটোরের গুরুদাসপুরে অস্বাভাবিকভাবে কমেছে বেগুনের দাম। উপজেলা জুড়ে এ সবজি পাইকারী ২ টাকা এবং খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা কেজিতে।
শনিবার (১৬ মার্চ) উপজেলার সবচেয়ে বড় কাচা বাজারের মোকাম চাঁচকৈড় হাট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
এক সপ্তাহ আগে একই বাজারে বিভিন্ন প্রজাতীর বেগুন খুচরা বাজারে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ শহরের আড়তে বেগুন বিক্রি হয় ১০ টাকা কেজিতে। একই চিত্র দেখা গেছে উপজেলার খুবজীপুর, কাছিকাটা, ধারাবারিষা, মশিন্দা, নাজিরপুরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে।
চাঁচকৈড় হাটের সবজি ক্রেতা মকছেদ আলী জানান, সকালে বাজারে গিয়ে দেখি বেগুনের দাম অস্বাভাবিক কম। মাঝারি মানের এক বস্তা (৪০ কেজি) বেগুন কিনেছি ৫০ টাকায়। কম দামে সবজি কিনতে পেরে খুশি তিনি।
একই হাটে বেগুন বিক্রি করতে এসেছেন পৌর শহরের আনন্দ নগর মহল্লার বেগুন চাষী গোলাম মোস্তফা । তিনি জানান, হাটে ২ মন বেগুন বিক্রি করতে এসেছিলাম। আড়ৎগুলোতে দাম কম দেখে খুচরা একমন (৪০ কেজি) বিক্রি করেছি ১শ টাকায়। অবশিষ্ট একবস্তা বাসায় ফিরিয়ে এনে গ্রামের মাদ্রাসার এতিম শিক্ষার্থীদের খাবার জন্য দান করে দিয়েছি।
তিনি আরও জানান, তিনি এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। তার মতো সব চাষীই রমজান মাসকে লক্ষ্য করে উৎপাদন করেছেন। আমদানী বেড়েছে তাই দামও কম। খরচ না ওঠায় হতাশ তিনি।
বেগুন চাষি ছাবলু প্রামানিক বলেন, এক বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করতে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হইছে। ৩ হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারি নাই। দাম কম বলে ক্ষেতের বেগুন ক্ষেতেই রেখেছি। লাভ তো দূরের কথা, হাটে বেগুন নিয়ে আসার ভ্যান ভাড়াও উঠে না।
চাঁচকৈড় হাটের মেহেদী আড়ৎ এর কর্নধার শাহিনুর শেখ জানান, সকালে তার আড়তে ৫০ কেজি ওজনের ২শ বস্তা বেগুন এসেছে। অস্বাভাবিক আমদানী হলেও পাইকার খুবই কম। এ কারনে প্রতিবস্তা বেগুন ৬০ টাকা থেকে ১শ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এর কারণে চাষিরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এলাকায় বেগুন সংরক্ষণের জন্য হিমাগার না থাকায় এসব বেগুন সংরক্ষণেরও সুযোগ নেই।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :