রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সাংবাদিক লাঞ্ছিতের ঘটনায় গঙ্গাচড়া উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দের মানববন্ধনে প্রকাশ্যে হামলা চালায় ৬নং গজঘণ্টা ইউপি চেয়ারম্যানের প্রভাবশালী লোকজন।
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানায়, উপজেলার জয়দেব বাইতুল আরশ জামে মসজিদের সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর সোমবার বিকেলে গজঘণ্টা ইউনিয়ন পরিষদে (টিসিবি) কর্তৃক কার্ডের মাধ্যমে সুলভ মূল্যে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকের ওপর হামলা চালানো হয়।
জানা গেছে, পূর্বতন সংবাদের জেরে একুশে সংবাদের সাংবাদিক ওয়াসিমুল বারী সিয়ামকে ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রেখে মোবাইল ফোন আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলে ও মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নিয়ে লাঞ্ছিত করে। এর প্রতিবাদে ৬নং গজঘন্টা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।
মঙ্গলবার(১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার গঙ্গাচড়া বাজার জিরোপয়েন্টে মানববন্ধন করতে গেলে আভিযুক্ত চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর পক্ষে কয়েকজন লোক মানববন্ধনের ব্যানার নিয়ে টানা হেচড়া করে পন্ড করে দেয়। এসময় থানা পুলিশকে দর্শকের ভূমিকায় দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
পরবর্তীতে পুলিশ এগিয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে সাংবাদিকদের উক্ত স্থান থেকে সরিয়ে দেয়। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গঙ্গাচড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল মজিদ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদানের মধ্য দিয়ে মানববন্ধন সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দৈনিক লাখোকন্ঠ ও দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল বারী দুলাল,আমার সংবাদ ও প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার বাবুল মিয়া, দৈনিক খোলা কাগজ ও আমাদের প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিনিধি নির্মল রায় , আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি আব্দুর রহিম পায়েল, জাতীয় অর্থনীতি পত্রিকার আজমীর শরীফ, বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার মিলন মিয়াসহ অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ।
এ বিষয়ে একুশে সংবাদের সাংবাদিক ওয়াসিমুল বারি সিয়াম জানান, পূর্বতন সংবাদ প্রকাশের জেরে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে ৬ নং গজঘণ্টা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সংবাদ সংগ্রহকালীন সময়ে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে আমাকে লাঞ্ছিত করে মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নিয়েছে ও মোবাইল ফোন ভাংচুর করেছে।এর প্রতিবাদে মানববন্ধনে চেয়ারম্যানের লোকজন হামলা চালিয়েছে।আমি এর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
সাংবাদিককে হেনস্তার বিষয় অস্বীকার করে গজঘণ্টা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, আমি কিছুই বুঝতেছি নাহ। কেন এই ছেলে আমার নামে অপবাদ রটাচ্ছে। এই ছেলেকে তো আমি চিনিই নাহ। সে সাংবাদিক কিনা সেটাও জানি নাহ। পরবর্তীতে আবার বলেন অই ছেলে আমার আত্মীয় হয়। তার বড়ভাই আমার ভগ্নীপতি। তার বাবা এই ছেলেকে মানুষ করতে পারে নাই।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুমুর রহমান জানান, এবিষয়ে তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে আমার অফিসারকে পাঠিয়েছিলাম। আমি এখন কোর্টে সাক্ষী দিতে কুড়িগ্রামে আছি। মানববন্ধনের স্থানে পুলিশ ছিলো।মানববন্ধনে হামলার বিষয়ে আমি অবগত নই। থানায় যাওয়ার পর এবিষয়ে আপনাকে জানাতে পারবো।
একশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :