লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে প্রতিবেশীর দেয়া বাঁশের বেড়ার কারনে গত দুই সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে চার পরিবারের লোকজন। এতে কোন দিকে বের হতে না পেরে মানবেতর জীবন যাপন করছে বাড়ির বাসিন্ধারা। উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম করপাড়া এলাকার হুনার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় ভুক্তভোগীদের পক্ষে দিনমজুর আবদুল মতিন রমগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পশ্চিম করপাড়া এলাকার হুনার বাড়ীর রাস্তা বন্দ করে দিনমজুর আবদুল মতিনের বসতঘরের পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে দেন একই বাড়ির নূরুল হুদা ও তার ছেলে দিদার। এতে বাড়ির আবদুল মতিন, শামছুল ইসলাম, আবদুল মান্নান ও আবু তাহেরের পরিবারের লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
২৫ মার্চ সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে আবদুল মতিন বলেন, গত কয়েকমাস আগে বাড়ির চলাচলের একটি রাস্তা বন্ধ করে দেয়াল নির্মান করে দিয়েছে প্রভাবশালী শাহজাহানের নেতৃত্বে একটি চক্র। তবুও এতো দিন কষ্ট করে আমরা চলাচল করেছি। সাপ্তাহ দুয়েক আগে শাহজাহানের পরামর্শে বাড়ির আরেক প্রতিবেশী নূরূল হুদা আর তার ছেলে দিদার আমাদের বসতঘরের পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে দেয়। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছিনা। কোন কথাও বলতে পারছিনা, প্রতিবাদ করলেই নানা আযুহাতে থানায় ধরে দেয়ারও হুমকি দেয় শাহজাহান। এব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেও কোন ফল পাইনি। স্ত্রী, সন্তান আর নাতি নাতনিদের নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। নিজের বাড়িতে থেকেও যেন কারাগারে থাকি।
বাড়ির আরেক বাসিন্ধা দিনমজুর শামছুল আলমের স্ত্রী শিউলি আক্তার বলেন, শাহাজাহান আগেও আমাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়াল নির্মান করেছে। আমরা গরীব হওয়ায় কোন প্রতিবাদ করতে পারিনি। এখন আবার বাড়ির নূরুল হুদা আর তার ছেলেকে দিয়ে আমাদের চলাচলের এ রাস্তাটিও বন্ধ করে দিয়েছে শাহজাহান। আভিযুক্ত শাহজাহানের মুটোফোনে ফোন দিয়ে এব্যাপরে জানতে চাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন ব্যাস্ত আছি, পরে কথা বলবো। আরেক অভিযুক্ত নূরুল হদা বলেন, আমাদের জায়গা দিয়ে আমরা কাউকে হাটতে দিব না তাই বেড়া দিয়েছি। তবে তার ছেলে দিদার বলেন, আমি এখানে ঘর কববো তাই চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি। তবে তাদের হাটতে দিতে পারি কিন্তু রাস্তা দিতে পারবো না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য টেলু কারাগারে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি তবে করপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম মির্জা বলেন, মানুষের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যায়না, এটা অমানবিক। খোঁজখবর নিয়ে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবো।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা রামগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর আবদুল আলিম বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাঁশের বেড়া দিয়ে বাড়ি চলাচলের রাস্তা বন্ধ করা একটি অমানবিক কাজ। ওই বাড়ির শাহজাহান মুহুরি এসব করাচ্ছে কিন্তু আমরা তো এভাবে বেড়া তুলে দিতে পারিনা। তাই আমি ভুক্তভোগীদের দেওয়ানী আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :