ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবির আলোচিত ঘটনায় ৭ জনকে আসামী করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা। মামলার পর মানবপাচার দলের প্রধান মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাই সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ৩নং আসামী এসএম শাকিল হোসাইনকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছেন সালথা থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া এসএম শাকিল হোসাইন উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের মৃত নওফেল মাতুব্বরের ছেলে। বর্তমানে সে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কয়েক মাস আগে এই ছাত্রলীগ নেতা বিয়ে করে পার্শ্ববর্তী রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের মুকুল ঠাকুর নামক এক ব্যক্তির মেয়েকে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান বলেন, মুক্তিপণের দাবিতে লিবিয়ায় ভিকটিম শাকিলকে আটকিয়ে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। ঘটনাটি গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ায় সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় শাকিলের বাবা টিটুল মিয়া প্রথমে মামলা করতে চাননি। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মানবপাচার দমন আইনে ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, মামলার পর শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় আসামী শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শাকিল এই মামলার প্রধান আসামি মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল অনেক তথ্য দিয়েছে। আমরা আশা করছি ভিকটিম শাকিলকে দ্রুত উদ্ধার করতে পারবো।
উল্লেখ্য, অভাবের সংসারে পরিবারের মুখে একটু হাঁসি ফোটাতে পড়াশোনা বাদ দিয়ে গত চার মাস আগে প্রতিবেশী মুকুল ঠাকুর নামে এক দালালের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালির উদ্দেশ্য রওনা হন শাকিল মিয়া। কিন্তু দালালরা তাকে ইতালির বদলে লিবিয়ায় নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে তাকে আটকে রেখে দালালরা আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছেন।
শাকিল সালথা উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তুপুর গ্রামের দিনমুজুর মো. টিটুল মিয়ার একমাত্র ছেলে। তিনি ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। এদিকে একমাত্র সন্তানের এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে গেছেন বাবা টিটুল মিয়া, মা রাবেয়া বেগম ও একমাত্র বোন বৃষ্টি আক্তার।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :