ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জোরপুল এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় ৫ গাড়ি পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় অভিযোগের তীর উঠেছে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সড়কে নির্মাণ কাজ চলমান থাকলেও দূর্ঘটনার পর আশেপাশের কোথাও চোখে পড়েনি কোন সাইন ও মার্কিং। সর্বশেষ খবর পাওয়া অব্দি এ ঘটনায় আগুনে দগ্ধ হয়ে ২ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫ টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের জোড়পুল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, সড়কের মাঝে থাকা বোল্ডারে চাকা উঠে গেলে উলটে যায় তেলবাহী লরি। পরে সেখান থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ার পর আগুন ধরে যায়। এই আগুন ছড়িয়ে যায় আশেপাশের আরও ৪ টি গাড়িতে। এতে পুড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১টি তরমুজ বোঝাই ট্রাক, ১টি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক, ১টি কাভার্ড ভ্যান ও ১টি প্রাইভেট কার।
প্রত্যক্ষদর্শী আমিনুল ইসলাম বলেন, বোল্ডারের কারণে প্রথমে তেলের গাড়ি উল্টে যায়, পরে আগুন লাগে। তারপরে অন্যান্য গাড়িতে আগুন লাগে। বোল্ডারের কারণেই এই ঘটনা ঘটছে। এখানে কোন নিশান-টিশান কিচ্ছু নেই। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি কোন নিশানা থাকলে এমন ঘটনা হয়ত ঘটতোনা।
হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর রিজিওনের সার্কেল এএসপি রাজিউর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার এখানে রোডস এন্ড হাইওয়ের কাজ চলছিল। রোডস এন্ড হাইওয়ে ডিভাইডার দেওয়ার জন্য যেই বোল্ডার গুলো রেখেছিল রাস্তার ওপরে সেই বোল্ডারের সাথে ধাক্কা লেগে ট্যাংক লরিটা প্রথমে উল্টে যায়। সেখানেই দুর্ঘটনার সূত্রপাত।
ফায়ার সার্ভিস ঢাকা জোন ৪ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন বলেন, মূলত সড়কের ওই স্থানে ইউ-টার্ন নির্মাণ করার জন্য বড় বড় পাথর (বোল্ডার) বসানো ছিল। সেই পাথরে গাড়ির চাকা উঠে গেলেই উল্টে যায় তেলের ট্যাংকারটি। সড়কে কোন সাইন ও মার্কিং ছিলনা। যেহেতু ভোরের দিকে ঘটনা চালক অবচেতন ভাবে কিংবা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বোল্ডারের সাথে ধাক্কা লাগায়। তখন এ দূর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আগুনে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান ইকবাল হোসেন (৩৪) নামে এক ব্যক্তি। তিনি সাভারের হেমায়েতপুরে বসবাস করতেন এবং সিমেন্টের ট্রাকের লোডার হিসেবে কাজ করতেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় নজরুল নামে আরেক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন বাকি ৭ আহতরা হলেন, হেলাল(৩০), সাকিব (২৪), আ. সালাম (৩৫), মিলন মোল্লা (২২), আল আমিন (৩৫), নিরঞ্জন (৪৫) ও মিম (১০)। তাদের মধ্যে হেলাল ও সাকিবের অবস্থা সবচেয়ে গুরুতর।
এ বিষয়ে সওজের ঢাকা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ ও ঢাকা উপ-বিভাগ ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মমিনুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :