মোটরসাইকেল চুরির অপরাধে রানীশংকৈল পৌরসভার বহিষ্কৃত কাউন্সিলর আব্দুর রাজ্জাক (৪৩) ফের গ্রেপ্তার হয়েছেন। এসময় তার সহযোগী রাজীব (৩৫) নামে আরেকজনকে আটক করা হয়। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মোটরসাইকেল চুরির ৭১টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রাজ্জাক রানীশংকৈল পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন ও ভান্ডারা গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। আটক সহযোগী রাজীব একই এলাকার ফয়েজউদ্দীনের ছেলে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) রাতে পৌর শহরের দক্ষিণ পাড়া প্রগতি ক্লাব এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে রাণীশংকৈল থানা পুলিশ।
আব্দুর রাজ্জাক আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর দলের প্রধান। তাঁর নামে বিভিন্ন থানায় মোটরসাইকেল চুরির ৭১টি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি মামলা খারিজ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের দক্ষিণ পাড়া এলাকার আসাদুজ্জামান আশা নামে এক ব্যক্তির বাসার গেটের সামনে মোটর সাইকেলটি রেখে সে বাসায় ইফতার মাহফিলে ইফতার করছিলেন অনেক মুসুল্লি । এমন সময় আব্দুর রাজ্জাক ও তার সহযোগী রাজীব মোটর সাইকেলের তালা ভেঙ্গে চুরি করার সময় স্থানীয় এক মহিলার নজরে পড়ে। তিনি সেসময় চিৎকার দিলে তখনি আসাদুজ্জামান আশা ও স্থানীয় জনতা হাতে নাতে ধরে ফেলে রাজ্জাক ও সহযোগী রাজিবকে। আটকের পরে তাদের গণধোলাই দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
এসময় স্থানীয়দের গণধোলাই থেকে বাঁচাতে মোটরসাইকেল মালিক আসাদুজ্জামান আশা তার বাসার একটি রুমে চোর আব্দুর রাজ্জাক ও সহযোগী রাজিবকে আটক করে রাখেন । এসময় রাজ্জাকের ব্যবহৃত পালসার ১৫০সিসি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় উৎসুক জনতা। ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তে সেখানে শতশত মানুষের সমাগম ঘটে। এক পর্যায়ে চোর রাজ্জাককে মেরে ফেলতে উদ্দত হয় তারা।
কুখ্যাত মোটরসাইকেল চোর বহিষ্কৃত পৌর কাউন্সিল`র আব্দুর রাজ্জাককে জনতার রোষানল থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে জনতার সাথে পুলিশের ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রকিবুল হাসান, সার্কেল এসপি রেজাউল করিম সহ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে ৩ ঘন্টা পর জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে মোটরসাইকেল চুরির অপরাধে রাজ্জাক ও সহযোগী রাজীবকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা জানান, আব্দুর রাজ্জাক আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর দলের প্রধান। তার নামে বিভিন্ন থানায় মোটরসাইকেল চুরির ৭১টি মামলা রয়েছে। বিভিন্ন সময় তাকে গ্রেপ্তার করলেও জামিন পেয়ে তিনি বেরিয়ে এসে আবার ডাকাতি-চুরির সঙ্গে জড়িয়ে যান।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজ্জাক চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে তার বিরুদ্ধে চুরি মামলা দায়ের করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাকে আবারও আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :