নাটোরের বড়াইগ্রামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক ভাবে মৃত্য হয়েছে।গত রবিবার বিকালে এই গৃহবধূ আমিনা হাসপাতালে মৃত্য হয়। গৃহবধূ নাম ফিরোজা স্বামী নাহিদ পিতা কায়েমদ্দিন উপজেলার ১নং জোয়াড়ী ইউনিয়নের জোয়াড়ী গ্রামে বাড়ী। নাহিদ বিজিপি চাকুরী করেন। ফিরোজার বাবার বাড়ি বাগাতীপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের মিশ্রিপাড়া গ্রামে পিতা মৃত নাসির উদ্দিন মাতা সালেহা বেগম। মেয়ের মা সালেহা বেগম জানান,আজ থেকে প্রায় ৪বছর পূর্বে নাহিদের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দেই। বিয়ে দেওয়া আগে ছেলেকে ৬লক্ষ ৫০হাজার টাকা দেই সেই টাকা দিলে নাহিদ বিডিআর চাকরী নেয়।
দশ লক্ষ টাকা কাবিননামার বিনিময়ে বিয়ে হয়। বিয়ের পর হতে আরও টাকার জন্য নাহিদের মা তার মেয়ে ও নাহিদসহ বাড়ির সবাই বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন ও মানসিক অশান্তি সৃষ্টি করে।এই নিয়ে অনেক বার সালিশ দরবার হয়।সংসারে ঠিকতে না পেরে মেয়ে আমার বাড়িতে বেশির ভাগ সময় থাকত। গত কয়েকদিন আগে দয়ারামপুর ইউনিয়নে পরিষদে সালিশ হয় এবং আমার মেয়েকে রাখবেনা ও তালাক দিবে এই বিষয় সিদ্ধান্ত হয় কাবিন ও নগদ ৬লক্ষ ৫০হাজার টাকাসহ ৯লক্ষ টাকায় দিয়ে খোলা তালাকের মাধ্যমে ফয়সালা হবে। কিন্তু আমার মেয়ে ফিরোজা ছেলের সাথে সংসার করার জন্য এক সপ্তাহে আগে নাহিদের বাড়িতে যায়। গত রবিবার দুপুরের দিকে নাহিদ ফোন দেয় আপনার মেয়ে অসুস্থ আপনি আসেন। আমি সিংড়া গিয়েছিলাম ওখান থেকে মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয়। নাটোর আসার পর ফোন দিলে নাহিদ বলে ফিরোজা একটু সুস্থ ঘুমাচ্ছে। আমি তারপর বনপাড়া আসি ভ্যান নিয়ে জামাই নাহিদের বাড়ি জোয়াড়ীতে যাই। যাওয়া পর আশেপাশের অনেকেই বলে আপনার মেয়ের নাক মুখ দিয়ে ফুপরি উঠছে আমিনা হাসপাতালে নিয়ে গেছে।আমি তখন আমিনা হাসপাতালে আসি দেখি জামাই নাহিদ তার বোনসহ অনেকেই দাঁড়িয়ে আছে আমি বললাম ফিরোজা কই তারা বলল জরুরী বিভাগে আছে।আমি জরুরী বিভাগে গিয়ে দেখি মেয়ে নিস্তেজ অবস্থায় আমি চিৎকার দিয়ে কান্না শুরু করি নাস হাসপাতালের লোকসহ নাহিদ আমাকে বাহিরে নিয়ে আসে আর ওখানে দেখতে দেয়নি পরে শুনলাম মারা গেছে।
নাহিদ তার বোনসহ আমার মেয়েকে তাড়াতাড়ি করে হাসপাতাল হতে জোয়াড়ী নাহিদের বাড়িতে নিয়ে যায়। আমি মেয়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে তারা দেয়নি।আমি বাড়িতে সংবাদ দিলে আমার ছেলে সাইফুল আসে পরিস্থিতি দেখে আমার ছেলে থানায় যায়। ফিরোজার ভাই সাইফুল বলেন,আমি জোয়াড়ীতে আসার পর মা ও এলাকার লোকদের কাছে শুনে মনে হল নাহিদসহ এরা আমার বোনকে যেভাবে হোক মেরে ফেলেছে সন্দেহ হলে বড়াইগ্রাম থানায় গিয়ে অভিযোগ করি পরবর্তীকালে পুলিশ এসে আমার বোনকে থানায় নিয়ে যায়।
পোষ্ট মর্টেম করে আমার বোনের লাশ দিলে লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে মিশ্রিপাড়া কবরস্হানে দাফন করি। আমার বোন থানায় নিয়ে যাওয়া পর হতে দাফন শেষ পযর্ন্ত এখন ও কেউ যোগাযোগ করেনি। আমার ভগ্নিপতিসহ সকলকে ফোনে জানালে কেউ আসেনি। তিনি আরও বলেন,জোয়াড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চাঁন মোহাম্মদ মিমাংসার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেন এবং আমাদের দয়ারামপুর চেয়ারম্যান মিঠু কাছে অনেক বার ফোন করেন। তিনি আরও বলেন, জোয়াড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চাঁন মোহাম্মদ বিষয়টি কৌশলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
জোয়াড়ি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান চাঁদ মাহমুদ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার কথা অস্বীকার করে জানান, সমাধানের চেষ্টা করেছিলাম, বর্তমানে প্রশাসনের আওতায় যাওয়ায় এ বিষয়ে আমার আর কিছু করার নেই।
মৃতঃ ফিরোজার স্বামী( নাহিদ) গনমাধ্যমে কথা বলবেনা মর্মে জানান, এখন কোন বক্তব্য নেই পোস্টমর্টেম রিপোর্টে যা আসবে সেটাই আমার বক্তব্য।বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিউল আজম খান বলেন,মৃত ফিরোজার ভাই সাইফুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে লাশ থানায় এনে নাটোর হাসপাতালে পোষ্ট মর্টেম করে সাইফুলের কাজে ফিরোজার লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।পরবর্তীতে তদন্তের মাধ্যমে দোষী হলে আইনুযায়ী ব্যবস্সা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :