ঈদযাত্রা শুরু হলেও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের অংশে যাত্রী ও যানবাহনের তেমন চাপ নেই। মহাসড়কের স্বস্তিতেই চলাচল করছে দুরপাল্লার পরিবহন বাসসহ আঞ্চলিক বাসগুলোও। তবে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার সদর উপজেলা পরিষদের সমানে সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ এখনও চলামন থাকায় যানজটের শঙ্কা রয়েছে। ফলে কিছুটা ভোগান্তি হতে পারে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের।
অন্যদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথেও যাত্রী ও যানবাহনে বাড়তি কোন চাপ নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঘাট কর্তৃপক্ষ। ঈদে ঘরমুখী মানুষ ও যানবাহন নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে নৌপথ পারাপারে ফেরিঘাট কৃর্তৃপক্ষ, জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসন নানামুখি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বৈরি আবহাওয়া না থাকলে এবারের ঈদযাত্রায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাট হয়ে ভোগান্তি ছাড়াই গ্রামের বাড়ি ফিরতে পারবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল জেলার মানুষেরা।
সোমবার (৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, জাগীর পুলিশ ক্যাম্প, গোলড়াসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদে মহাসড়কের পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাটমুখী যানবাহনের তেমন চাপ নেই। কিছুক্ষণ পর পর দুরপাল্লার পরিবহন বাস স্বাভাবিক ভাবেই চলাচল করছে। ঢাকা থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত চালাচলকারী সেলফি পরিবহনগুলোতেও যাত্রীর চাম কম ছিল। বাসস্ট্যান্ড এলাকার সদর উপজেলা পরিষদের সামনে সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ওই স্থানে সড়ক পারাপারের সময় সরাসরি লেনের আসা যানবাহনগেুলোকে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়। মহাসড়কে পাটুরিয়ামুখী যানবাহনের চাপ বেড়ে গেলে ওই স্থানে যানজটের আশঙ্কা করছে পরিবহন চালকেরা।
গোল্ডেন পরিবহনের যাত্রী মিজানুর রহমান জানান, পাটুরিয়া ফেরিঘাট হয়ে প্রতিবছরই ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের যাই। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে, অনেক ঈদযাত্রায় ২০ থেকে ২৫ ঘন্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে, মহাসড়ক ও ফেরিঘাট এলাকায়। কিন্তু পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকে এই রুটে যানবাহনের চাপ অনেক কম হয়। আশুলিয়া এলাকায় মুদি দোকান করি। এজন্য পদ্মা সেতু হয়ে বাড়ি যাওয়া হয় না, আমি সবসময় পাটুরিয়া ঘাট হয়েই গ্রামের বাড়িতে যাতায়াত করি।
গোলড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুখেন্দু বসু বলেন, ঈদে মানুষজন গ্রামের বাড়িতে যেতে শুরু করছে। তবে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের অংশের যানবাহনের কোন চাপ নেই। ঈদের দু-একদিন আগে সাভার, আশুলিয়া, নবীনগরসহ ওই অঞ্চলের পোশাক কারখানা ছুটি হলে যানবাহনের চাপ কিছুটা বাড়বে। তবে মহাসড়কে যানজটমুক্ত রাখতে জেলা পুলিশের পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশও কাজ করবে। আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রায় ঘরমুখী যাত্রীদের সড়ক পথে তেমন ভোগান্তি হবে না বলে তিনি জানান।
জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) কে এম মেরাজ উদ্দিন বলেন, ঈদযাত্রায় ঘরমুখী যাত্রী ও যানবাহনগুলোকে নিরাপদ যাতায়াতের ক্ষেত্রে জেলা পুলিশ সুপার আমাদের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সদর উপজেলা পরিষদের সামনে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাজ যদি দ্রুত শেষ হয়, তাহেল ওই স্থানেও যানজটমুক্ত রাখতে আমরা কাজ করবো। আর মহাসড়কে যান চালাচল স্বাভাবিক থাকলে কোনো ভোগান্তি হবে যাত্রী ও বাস চালকদের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশেন (বিআইডব্লিটিসি) আরিচা কার্যালয়ের বাণিজ্য শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ বলেন,
ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়লেও নৌবহরে পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় ভোগান্তি ছাড়াই পারাপার হচ্ছে। আজকে সকালের দিকে কিছু যাত্রীবাহী বাস ও ছোট গাড়ি ছিল, তবে ঘাটে আসা মাত্রই ফেরিতে ওঠে নদী পার হয়েছে। আশা করছি, ভোগান্তি ছাড়াই এবার ঘরমুখী মানুষ ও যানগুলো নৌপথ পারাপার হতে পারবে এবং গ্রামের বাড়িতে গিয়ে মানুষ প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে পারবে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :