ফরিদপুরে তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গেল এক সপ্তাহ ধরে বয়ে যাওয়া গরম সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বৈদ্যুতিক লোডশেডিং। এতে করে ফরিদপুর জেলার মানুষের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষেরা বিপাকে পড়েছে বেশি। আবহাওয়া অফিস বলছে, আরো কয়েকদিন এমন বৈরী আবহাওয়া থাকতে পারে। আর স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এ মুহূর্তে অতিরিক্ত পানি পান করা, তরল খাবার খাওয়া এবং ঝুঁকি না নিয়ে রোদ্রের মধ্যে চলা চলে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ।
সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ। গরম উপেক্ষা করেই তাদের বাইরে বের হতে হচ্ছে। গরমের তীব্রতা থেকে রক্ষায় অনেককে দেখা গেছে রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে আবার পুকুরে নেমে ছোট ছোট ছেলে মেয়ে গোসল করতে দেখা গেছে ।
এদিকে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে বলে গ্রাহকরা জানিয়েছে। গরম আর লোডশেডিং মিলিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের।মধ্যরাতেও দীর্ঘ সময় লোডশেডিং হওয়ায় মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এদিকে তীব্র গরমে বেড়েছে সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধা-বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে দাম বেড়েছে ডাব ও তরল জাতীয় খাবার। প্রতিটি ডাবের দাম বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শরবত প্রতি গ্রাস ২০ টাকা, লেবুর শরবত প্রতি গ্রাস ২০ টাকা, স্যালাইন তুলনামুলক কম পাওয়া যাচ্ছে।
ভ্যানচালক আব্দুল আলীম বলেন, কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড গরম পড়েছে। গরমের কারণে ভ্যান চালানো অনেক কষ্ট হচ্ছে। আবার অতিরিক্ত গরমের কারণে লোকজন বাইরে কম বের হচ্ছে। ফলে খুব একটা যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। এতে আমাদের আয় রোজগার কমে গেছে।
বোয়ালমারী রেলস্টেশনের সামনে থেকে কথা হয় ভাটপাড়া গ্রামের আক্তার হোসেনের সাথে তিনি বলেন, প্রচন্ড গরমের পাশাপাশি লোডশেডিং চরমে। গ্রামের মানুষ দিনে বাঁশতলা, গাছতলায় বসে বিশ্রাম নিলেও রাতের বেলায় সেটি সম্ভব না। ভ্যাপসা গরমে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক ডাক্তার বলেন, গত কয়েক দিন থেকে ফরিদপুর জেলাতে প্রচন্ড গরমের কারণে বেড়েছে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে । এসব রোগে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারণে এই হাসপাতালের আউট ডোর ও ইনডোরে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এই গরমে সুস্থ থাকতে হলে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাবেনা। গরমের অনুভব বেশী হলে বেশী বেশী করে পানি, স্যালাইন পানি, ডাবের পানি বা তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :