ময়মনসিংহ নগরীর সড়কগুলোতে যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামা, উল্টো পথে যানবাহন চলাচল, অনুমোদনহীন পার্কিং ও স্টপেজ, অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গতি-সব কিছুই চলছে একদম বিনা বাধায়। ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। লাইসেন্সবিহীন সিএনজি অটোরিক্সা ও মাহিন্দ্রসহ থ্রি হুইলারের অবাধ চলাচল তো আছেই। আছে নগরীর মোড়ে মোড়ে ও ব্যস্ত সড়কের ওপর অনুমোদনহীন ইজিবাইক ও সিএনজি অটোরিক্সার স্ট্যান্ড। সব মিলিয়ে ময়মনসিংহ নগরী এখন যানবাহনের নৈরাজ্যের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। অথচ সড়কের এমন নৈরাজ্যকর অবস্থায় শৃখলা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশের নেই কার্যকর ও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ।
সড়কের এই বিশৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষুব্ধ হচ্ছে নগরীর বিশিষ্টজনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। ময়মনসিংহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানান, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক, সিটি কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, সড়ক কর্তৃপক্ষ ও নগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। ময়মনসিংহ সিটি কর্তৃপক্ষ ও নাগরিক নেতৃবৃন্দের দাবি ট্রাফিক পুলিশ লাইসেন্সবিহীন সিএনজি অটোরিক্সা ও মাহিন্দ্রসহ অনুমোদনহীন থ্রি হুইলার ধরপাকড় করলেই শৃঙ্খলা ফিরবে নগরীর সড়কে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়,নগরীর চরপাড়া মোড়, পাটগুদাম ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ মোড় ও গাঙিনাপাড় ট্রাফিক মোড়সহ নগরীর বিভিন্ন ব্যস্ততম মোড় ও সড়কে ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিক্সা ও বাস থামানো যাবে না সাইন বোর্ড টাঙানো থাকলেও যানবাহনের চালকরা তা মানছে না।
চরপাড়া মোড়ে অহরহ শালবন পরিবহন সার্ভিসের বাস ও ইজিবাইকসহ সিএনজি অটোরিক্সা থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। এ ছাড়া চরপাড়া মোড় থেকে ব্যস্ততম ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের দুইপাশে দুই লেন দখল করে রাখছে বেসরকারি প্রাইভেট হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ও ভাড়ায়চালিত প্রাইভেটকারসহ ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের মোটরবাইক। একই সড়কের ওপর সবুজ সিএনজি অটোরিক্সার স্ট্যান্ড গড়ে তোলে দূরপাল্লার যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছে। এর বাইরে ব্যস্ততম এই সড়কে ডিভাইডার থাকায় উল্টোপথে চলাচল করছে নানা যানবাহন। পাটগুদাম ব্রিজ মোড়, গাঙিনাপাড় ট্রাফিক মোড়, নতুন বাজার মোড় ও জিলা স্কুল মোড়েও চোখে পড়বে উল্টো পথে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচলের দৃশ্য।
নগরীর রামবাবু রোড, নতুনবাজার, জিলা স্কুল রোড, গাঙিনাপাড়, স্টেশন রোড, সিকে ঘোষ রোড, সাহেব আলী রোড, রামকৃষ্ণ মিশন রোডে পায়ে হেঁটে চলাও দুষ্কর হয়ে পড়েছে এসব যানবাহনের নৈরাজ্যের কারণে। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী যুগ্ম সচিব ইউসুফ আলী জানান, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশের। ময়মনসিংহ সিটি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাদেকুল হক খান মিল্কি টজু জানান, লাইসেন্স প্রদানে সিটি কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও চাঁদাবাজিসহ ট্রাফিক পুলিশের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় সড়কের শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু সংবাদ প্রতিদিনকে জানান,টেকসই ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা ছাড়া এই সংকটের স্থায়ী সমাধান কঠিন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :