দেশজুড়ে চলছে দাবদাহ। তবে কয়েকদিন ধরে খুলনা বিভাগে তাপমাত্রা প্রায় একই থাকছে। বৈশাখের শুরু থেকেই বাড়তে থাকা তাপমাত্রা গত কয়েকদিন ধরে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। ঘর থেকে বের হলেই গরম বাতাস শরীরে জ্বালা ধরাচ্ছে। জনজীবন একেবারে বিপর্যস্ত
সোমবার (২২ এপ্রিল) খুলনা বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোর ও চুয়াডাঙ্গায়। খুলনায় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
খুলনার সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ একুশে সংবাদকে বলেন, ‘সোমবার খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর জেলায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি, চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ৩৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি, মোংলায় ৪০ ডিগ্রি, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪০ ডিগ্রি।
এদিকে তীব্র তাপদাহে নাকাল হয়ে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষের জীবন। জীবিকার তাগিদে এমন খরতাপের মধ্যেও ঘর থেকে বাহিরে বের হতে হচ্ছে তাদের। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
খুলনার নিরালা মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজিচালক নাদিম সরদার বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাড়ি চালাতে হয়। নিত্যপণ্যের যে দাম, তাতে আর বিশ্রাম নেওয়ার কথা মাথায় আসে না। সারাদিনের কষ্ট শেষে ঘরে ফিরে পরিবারের হাসিমুখ দেখলে তৃপ্তি মেলে। পরের দিন আবার কাজে বের হতে হয়। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমে গলা শুকিয়ে আসে। তৃষ্ণা নিবারণের জন্য মাঝে মধ্যে পানি পান করি। তারপরও মনে হয় তৃষ্ণা মিটছে না। গরম বাতাস আর সূর্যের তাপে শরীরে জ্বালাপোড়া করে।
নগরীর শিববাড়ি মোড়ের ভ্যানে সবজি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে আমি সবজি বিক্রি করে খাই। স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে আমার পরিবার। ছেলেকে মানুষ করেছি, বিয়ে দিয়েছি। এখন তিনজনের সংসার আর মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে আমাকে কাজ করতে হয়। রোদে বসে, রাস্তায় ঘুরে ঘুরে সবজি বিক্রি করি। এখন সব সহে গেছে, তাপমাত্রা বুঝি না।
যশোর শহরের ধর্মতলা বাইপাস সড়কের পাশে পণ্য ডেলিভারির গাড়ি পার্কিং করে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন আফাজাল হোসেন। তিনি বলেন, সকালে ঘর থেকে বের হয়ে গোডাউনে গেছি, মাল নিয়ে ৭০-৮০ জায়গায় ডেলিভারি দিয়ে শরীরে আর কুলাচ্ছে না। মন চাচ্ছে গায়ে পানি ঢেলে বসে থাকি।
চুয়াডাঙ্গার একুশে সংবাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় জেলায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে রোববার (২১ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি ও শনিবার (২০ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
এপ্রিল মাসজুড়ে দাবদাহ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান।
একুশে সংবাদ/ঢা.পো./এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :