পুরো এপ্রিল মাসেই তীব্র তাপে পুড়েছে যশোর। মাসের শেষ দিন মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে এই জেলায়। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতেই ভেঙে গেছে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সব রেকর্ড।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আজ যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় ৪৩.৭ ডিগ্রি, ঈশ্বরদীতে ৪৩.২ ডিগ্রি ও রাজশাহীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তীব্র তাপপ্রবাহে নাজেহাল হয়ে পড়েছে সব শ্রেণিপেশার মানুষের জনজীবন। বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেও জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে বাইরে বের হতে হচ্ছে তাদের।
শহরের আব্দুর রাজ্জাক কলেজ মোড় এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক ফজল মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, খুব গরম, রাস্তায় রিকশা নিয়ে বের হলে শরীর মনে হয় পুড়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে বেলা দুপুর পর্যন্ত আয় হয়েছে মাত্র ২০০ টাকা। মালিককে দিতে হবে ২৫০ টাকা। এত গরমে রিকশা চালাতে পারি না। সিটের নিচে পানি রাখি, বার বার হাতমুখ ধুই। সন্ধ্যার দিকে আবার বের হতে হবে। এই গরমে সারাদিন যাত্রীও মিলবে না।
রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায় তালপাতার পাখা বিক্রি করছিলেন করিম শেখ। কালীগঞ্জ থেকে সকালে এসেছেন তিনি। বেলা ১২টা পর্যন্ত ছয়টি পাখা বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে লোকজন কম, সেই কারণে বেচাবিক্রিও কম। হাতে তৈরি তালপাতার পাখা ৩০ টাকা থেকে ৬০ টাকা দামে বিক্রি করছেন তিনি।
এদিকে, তাপজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সময়ে অনেকে হাসপাতালে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি- কাশি, টাইফয়েড নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। এসব রোগীদের সেবা দেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে তাপপ্রবাহ থেকে সুস্থ থাকতে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
যশোর মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক ডা. আলাউদ্দিন আল মামুন বলেন, এই সময়ে ডায়রিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি, পক্স, হিট স্ট্রোক, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি হতে পারে। প্রচণ্ড গরম থেকে মুক্তি পেতে কেউ যেন ডিপ ফ্রিজের পানি পান না করে। এ সময় প্রচুর পানি, ডাবের পানি, দেশি ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন।দিনমজুর বিশেষ করে কৃষকরা যেন সকাল ১১টার মধ্যে এবং বিকালে তাপমাত্রা কমলে কাজ করেন সেই পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা।
একুশে সংবাদ/স.ল.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :