গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা দিয়ে প্রবাহমান নলেয়া নদীটি চৈত্র ও বৈশাখের খড় তাপে শুকিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে নদীটি কোন রকম খনন না করায় নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার জমিতে ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষাবাদে কৃষকদের অনেকটা ব্যয় বেড়েছে।এতে বিশেষ করে প্রায় ২ শতাধিক জেলে পরিবার মাছ শিকার করতে না পেরে তাদের এখন দূর্বীসহ দিন কাটছে। কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকদের ফসল উৎপাদন ও মৎস্যজীবী পরিবারের জন্য নদীর পানির বিকল্প নেই। কিন্তু নদীর নাব্যতা হারিয়ে যাওয়ার সুযোগে স্থানীয়রা ক্রমান্বয়ে নদীর জায়গা দখলে নেওয়ায় তা দিনে দিনে সংকুচিত হয়ে আসছে।
দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধুর শাসন আমলে ১৯৭২-৭৩ সালে নদীর কিছু অংশ খনন করা হয়েছিল বলে জানান, ইদিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান সরকার। তাঁর ভাষ্য, এরপর নদীটি আর খননের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ কারনে শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় পলিতে ভরে গেছে অধিকাংশ জায়গা। বিদ্যমান এ পরিস্থিতিতে চাষাবাদে এ অঞ্চলের কৃষকদের নানা রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এদিকে চলমান বৈশাখের অসহনীয় তাপদাহে নদীর আশপাশেও তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে।
চলতি বছরে এত বেশি তাপমাত্রায় ক্ষতিকর জানিয়ে উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুর রব সরকার বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার তাপমাত্রা অনেক বেশি। এতে উদ্ভিদ, পশু-প্রাণিসহ মানুষের নানাবিধ সমস্যা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এ এলাকায় ৩৯ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা রয়েছে।
ক্ষোৰ্দ্দকোমরপুর ইউপি,র চেয়ারম্যান সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, এক সময়ের প্রমত্তা নলেয়া নদী দিন দিন ছোট হচ্ছে। নদীটি শুকিয়ে যাওয়ায় নদী তীরের জমির মালিকেরা তা ধীরে ধীরে নিজেরা দখল করে নিচ্ছেন। এছাড়া পানি শূন্যতায় মাছের আকালে মাছ শিকারে জীবিকা নির্বাহ করা জেলে পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে চরম আর্থিক সংকট। এ অবস্থায় তাদের আয় উপার্জন অনেকটা কমেছে। এমন দুর্দিনে তাদের জন্য সরকারি সাহায্যের চেষ্টা চলছে।
আগে সারাবছর নদীতে পানি থাকায় সহসায় সেচ দেয়া যেতো। এখন সেই সুযোগ নেই বলে জানান মাদারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী। তরফপাহারি গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলামের ভাষ্য, জেলে ও কৃষকের সুবিধার্থে নদীটি খনন করা একেবারে জরুরি হয়ে পড়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :