আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে লালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ৪ হেভিওয়েট নেতাসহ ৬ প্রার্থী। ভোটের মাঠে সক্রিয় ৬ প্রার্থীই। তাদের মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। তবে একই দলের পদধারী একাধিক নেতা প্রার্থী হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে একাধিক গ্রুপিং তৈরি হয়েছে। ফলে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের প্রতিদ্বন্দ্বী এখন আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটির কর্মী-সমর্থকরা চার খন্ড হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে নানান বিভক্তি। দলীয় কর্মী-সমর্থকরা কাকে রেখে কাকে ভোট দেবেন সে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছে এবার নির্বাচনের মাঠে কর্মীদের মূল্যায়ন হবে, নেতাদেরও জনপ্রিয়তা যাচাই হবে।
নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া আওয়ামীলীগ নেতারা হলেন-উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু, সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ সাগর, যুগ্ম-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জয়, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইসাহক আলী (বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান), আওয়ামিলীগ নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজসেবক মো: হাশেম আলী ডিলার ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ।
এদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফুর নিজস্ব সংগঠনের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ এর সমর্থন রয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ সাগর সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ মমতাজ উদ্দিন এর সন্তান হওয়ার পাশাপাশি ৫ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ৩ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সহ দলের একটি বড় অংশ সমর্থন দেওয়ায় ভালো অবস্থানে রয়েছেন। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসাহক আলী দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন প্রায় এক যুগের বেশি । উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জয়কে দলের একটি অংশ ও সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল সমর্থন দিয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে হঠাৎ করে প্রার্থী হয়েছে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মো: হাশেম আলী ডিলার। তিনি এলাকাবাসীর কাছে দানশীল ও ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
অপরদিকে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ বিএনপির একমাত্র প্রার্থী হিসেবে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। তিনি উপজেলাতে দক্ষ ও পরিশ্রমী সংগঠক হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি তার বাবা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
সাধারণ জনগণের মতে, ৬ জনই হেভিওয়েট প্রার্থী হওয়ায় জনগণের চেয়ারম্যানকেই বেছে নেবেন সবাই।
সাধারণ ভোটারদের মতামত হচ্ছে- ৬ প্রার্থীর মধ্যে ৫ জনই আ.লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী হওয়ায় তাদের কোন্দলের ফলে দলীয় সমর্থকদের ভোট ৫ খন্ডে বিভক্ত হবে।
এদিকে আ.লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, দলের নেতাদের মধ্যে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় তাদের অনেককে জটিল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। এতে নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে প্রকাশ্য বিভক্তি। দলীয় প্রার্থীরা যার যার কর্মী-সমর্থক নিয়ে আলাদা আলাদা শোডাউন-গণসংযোগ করছেন।
তবে সাধারণ নেতাকর্মীরা বলছেন, তারা সব প্রার্থীকে বিচার-বিশ্লেষণ করে যাকে এলাকার উন্নয়নের জন্য যোগ্য মনে হবে তাকেই ভোট দেবেন।
এসব কারণেই উপজেলা নির্বাচন ইস্যুতে আ.লীগের প্রতিপক্ষ এখন আ.লীগ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :