সোনালী পাকা ধানের গন্ধে মুখরিত চলনবিলের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে। রাতের আধার পেরিয়ে ভোর হলেই কৃষকরা দলবদ্ধ হয়ে পাকা ধান কাটতে ব্যাস্ত হয়ে পরে। সূর্য্য গড়িয়ে পশ্চিম আকাশে অস্তমিত পর্যন্ত চলে ধান কাটা, বহন ও মারাইয়ের কাজ। শ্রমিকদের সারিবদ্ধ হয়ে ধান কাটার এমনই দৃশ্য দেখা মিলে চলনবিল অধ্যূষিত নাটোরের গুরুদাসপুরে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়- মাঠ জুড়ে ব্রিধান-২৯, ব্রিধান-৫৮, ব্রিধান-৭৪, ব্রিধান-৮৯সহ উন্নত জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। হাতে কাস্তে মাথায় গামছা বেঁধে গুন গুন গান গাওয়ার ছলে এবং মুখে উলু ধ্বনি দিয়ে ধান কাটছে কৃষকরা। প্রখোর রোদে ধান কাটার মাঝেও তাদের মধ্যে দেখা যায় আনন্দের উৎসব। দিন শেষে মাথায় ধানের বোঝা নিয়ে লম্বা লাইনে বাড়ি ফিরে কৃষকরা। কেন না তাদের স্বাপ্নের সোনালী ধান যাচ্ছে বাড়ি।
চলনবিলের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাযায়- আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকার আক্রমন কম হওয়ায় এবছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ধানের ফলন ভালো হলেও বাজার দর কম হওয়ায় কিছুটা হতাশায় রয়েছে কৃষকরা। তারা যেন ধানের নায্যমূল্য পায়, তা নিশ্চিত করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন কৃষকরা।
কৃষি অফিস সুত্রে জানাযায়- জেলায় চলতি মওসুমে এবছর ৬০হাজার ৭শত ৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে গুরুদাসপুর উপজেলাতে ৫ হাজার ৬শত ১০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করা হয়েছে ২৭ হাজার ২শত ১০ মেট্রিক টন।
কৃষক শাকিল, মাহাবুর ও আলমগীর হোসেন বলেন- গত বছর বিঘাতে ২২-২৪ মণ হারে ধানের ফলন হয়েছিল। পোকা মাকরের আক্রমণ কম হওয়ায় এবং সময়মত ভর্তুকিমুল্যে সার ও বীজ পাওয়ায় এবছর ফলন ২৫-৩০ মণ হারে হয়েছে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার জমি লিজের মূল্য বেছে বিঘাপ্রতি ৩-৫ হাজার টাকা ও শ্রমিকের মূল্য বেড়েছে ১০০-১৫০ টাকা। গড়ে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ২৭ থেকে ২৮ হাজার টাকা পর্যন্ত।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ বলেন- এবছর পোকামাকরের আক্রমণ কম থাকায় এবং সময়মত কৃষকরা ভুর্তকি মূল্যে বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ পাওয়ায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষি অফিসের মাধ্যমে নিয়োমিত কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গুরুদাসপুরে ২৫ শতাংশ জমিতে ধান কাটা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে সব ধান কাটা হয়ে যাবে এবং আশা করছি কৃষক এবার ভালো লাভবান হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :