গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে আটকে পড়ে মমতাজ বেগম (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এঘটনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অবহিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো এক বার্তায় দাবি করা হয়েছে, ওই নারী লিফট-এ ৪৫ মিনিট আটকে ছিলেন না, ১০ থেকে ১৫ মিনিট আটকে ছিলেন।
রোববার (১২ মে) শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম ও গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হালিমের সই করা চিঠিতে এই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোববার রওশন এলিভেটর্সের মোভি ব্র্যান্ডের একটি লিফট আনুমানিক বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে ৯ম ও ১০ তলার মাঝামাঝি জায়গায় রোগী ও তার কয়েকজন স্বজনসহ হঠাৎ আটকে যায়। প্রাথমিকভাবে লিফটটি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য আটকে যায়। তবে, সেখানে আটকে পড়া রোগীর লোকজন লিফট-এর দরজা ধাক্কাধাক্কি করায় ‘ডোর সেফটি’ কাজ করেনি।
সাধারণত লিফটটির স্বয়ংক্রিয় রেসকিউ ডিভাইস (এআরডি) কাজ করার জন্য এক মিনিট সময়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু অতিরিক্ত ধাক্কাধাক্কির কারণে লিফটটি সেই সময়ে আর কাজ করেনি। এরপর লিফট অপারেটর মেশিন রুমে হাত দিয়ে ম্যানুয়ালি লিফটটি একটি ফ্লোরে আনার আগে রোগীসহ লোকজন দরজা খুলে বের হয়ে আসেন। এর মধ্যেই ১০-১৫ মিনিট সময় অতিবাহিত হয়।
মমতাজ বেগমের মৃত্যু প্রসঙ্গে বলা হয়, যে নারীর মৃত্যু হয়েছে, তিনি হার্টের রোগী ছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে, পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে ‘রোগীটি ৪৫ মিনিট লিফটে আটকে ছিলেন’, এ তথ্যটি ভুল।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, লিফটটি নিয়মিত সার্ভিস ও মেইনটেনেন্স করা হয় এবং বর্তমানে লিফটটি চালু আছে। আটকে পড়া রোগীসহ অন্য লোকজন দরজা ধাক্কাধাক্কি করায় লিফটটির সমস্যা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাটির সঠিক কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য,আজ সকালে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ৩ নম্বর লিফটে আটকে পড়ে মমতাজ বেগমের মৃত্যু হয়। পরে জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা গিয়ে লিফটে আটকে পড়া ওই রোগীর মরদেহ ও অন্যান্যদের উদ্ধার করেন। লিফট অপারেটরদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই নারীর স্বজনরা।
মৃত মমতাজ বেগম গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়িগাঁও গ্রামের শারফুদ্দিন বিএসসির স্ত্রী।
একুশে সংবাদ/ঢ.প.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :