৭০ জন নারী-পুরুষ গ্রামের মধ্যে রান্না করছিল পোলাও। শেষ হলে আনন্দের সহিত খাবে তারা। কিন্তু হঠাৎ হাজির বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। এরপর রান্না করা খাবারের মধ্যে দেওয়া হয় আবর্জনা। অভিযোগ এসিল্যান্ড ফিরোজ হোসেনের নির্দেশে তার গাড়ির চালক হযরত আলী রান্না করার পোলাওর মধ্যে ছাগলের বিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ছিটিয়ে দেয়। ঘটনাটি গত রবিবার ১৯ মে মধ্য রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামে। এঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জনমনে।
জানা যায়, আদমদীঘিতে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ২য় ধাপের নির্বাচন ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে আচরণবিধি বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডিউটি করছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। রবিবার রাতে সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামের কিছু প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ মিলে পিকনিকের আয়োজন করে। সেখানে আনারস প্রতীকের সমর্থক একই এলাকার সাধারণ ভোটারগণ একত্রিত হয়ে পোলাও পাক করছিলেন খাওয়ার জন্য। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অনেক লোকজন দেখে গাড়ি থামিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক তিনি তার সাথে থাকা গাড়ির চালক হযরত আলীকে রাস্তার আবর্জনা উঠিয়ে খিচুড়ির ডেক্সির ভিতর দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এসিল্যান্ডের নির্দেশ পেয়ে ড্রাইভার সঙ্গে সঙ্গে রান্না করা খাবারের মধ্যে বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ছিটিয়ে দেয়। এরপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন সেখানে উপস্থিত সকলে। তাদের দাবি তারা যদি কোনো অন্যায় করে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু রান্না করা খাবারের মধ্যে আবর্জনা দেওয়া মোটেও কাম্য নয়। এঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেছেন তারা। আর আনারস প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকেরা সেখানে পিকনিক খাচ্ছিল বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবু রেজা খান।
গ্রামের মকলেছুর রহমান বলেন, এক পোয়া করে চাল আর ৫০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে আমরা পিকনিকের আয়োজন করি। সেই মোতাবেক পোলাও রান্নার শেষ পর্যায়ে হঠাৎ এসিল্যান্ড এসে আমাদের জিজ্ঞেস করে আমরা ভোটের কোনো প্রার্থী আমাদের খাওয়াচ্ছে কিনা। আমরা পিকনিকের চাঁদার তালিকা তাকে দেখানোর পরও তার নির্দেশে প্রথমে জলন্ত চুলাতে পানি ঢেলে দেয়। এরপর রান্না করা পোলাওর ডেস্কির মধ্যে ছাগলের বিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ছিটিয়ে দেয়। তিনি একটু ক্ষোভ নিয়েই বলেন, একজনের খাবার কিভাবে নষ্ট করে, তা আমি আমার জীবনে দেখিনি। এটা খুব অমানবিক কাজ করেছেন তিনি।
একই সুরে আরেক নারী বলেন, আমরা চাঁদা দিয়ে পিকনিকের আয়োজন করে রান্না করছিলাম। কিন্তু খাবারের মধ্যে ময়লা আবর্জনা দেওয়ায় আমরা আর খাবার খেতে পারিনি। সারারাত না খেয়ে থাকতে হয়েছে। এটা আসলে ঠিক হয়নি।
ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার ফোন ও অফিসে গিয়েও সাড়া দেননি সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। আর ঘটনাটি জানতে চাইলে নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে মুঠোফোনে বলেন, নির্বাচন শেষ হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :