৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ঘোষিত তফশীল মোতাবেক ৫ জুন ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। বাকী রয়েছে আরো ৮ দিন। জমে উঠেছে ব্যাপক নির্বাচনী প্রচারণা। কিন্তু ভোটারদের মাঝে নেই কোন সারা। পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার এবং রাস্তার মোড়ের চায়ের দোকান গুলোর সামনে প্রচারণার মাইকের শব্দ যেন আকাশ বাতাস ভারি করে তুলেছে। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি এবং ছন্দে ছন্দে মাইকিং করছেন প্রার্থীগণ।
নির্বাচনে ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৫ নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং ৩ জন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সবাই স্ব-স্ব অবস্থান থেকে প্রার্থীগণ সকলে নির্বাচিত হওয়ার দাবি রাখছে। চেয়ারম্যান পথে একাধিক আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকলেও নেতাকর্মীরা ব্যক্তি বিশেষ ভোট প্রদানের আশাবাদ ব্যক্ত করছেন।
চিরাং ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সমর্থক ও কর্মী মো.কামরুজ্জামান বলেন, যেহেতু এবারে দলীয় মার্কা নেই, সেহেতু প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিক আওয়ামী লীগের ভাল নেতাকে বেঁচে নিয়ে ভোট দিতে হবে।
গন্ডা ইউনিয়নের সাধারণ ভোটার সুলতান মাহমুদ বলেন, ভোটের আলোচনা শুধু মাইকিং, পোষ্টারে এবং দলীয় নেতাকর্মীদের মতবিনিময় সভার মধ্যে সীমাবন্ধ। সাধারণ ভোটাদের মাঝে সাড়া কম।
উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সম্পাদক আসাদুল করিম মামুন বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীগণ নিজ যোগ্যতা বলে সামনে এগিয়ে যাবেন। দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থগণ তাদের পছন্দের নেতাকে ভোট দিবেন। একাধিক দলীয় প্রার্থী থাকার কারণে অনেক ভোটার বেকায়দায় আছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মো: মিজানুর রহমান জানান, আমি অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছি।উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে আমি আশাবাদী।
উল্লেখ্য, উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে সর্বশেষ চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন পাঁচজন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ পন্থি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মোজাফরপুর ইউনিয়নের সাবেক তিন বারের চেয়ারম্যান নুরুল আলম মো: জাহাঙ্গীর চৌধুরী, জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও চিরাং ইউনিয়নের সাবেক দুই বারের চেয়ারম্যান সালমা আক্তার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক দুই বারের ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন ভূঞা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পাইকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির চৌধুরী এবং জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সম্মানিত সদস্য মিজানুর রহমান।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হলেন- উপজেলার চিরাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র, কেন্দুয়া উপজেলা শাখা ও মানবাধিকার কর্মী মামুনুল কবীর খান, উপজেলা উলামা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা হারুনুর রশিদ তালুকদার, যুবলীগ নেতা মো: ইয়ার খান এবং অব. সার্জেন্ট মো: ইয়াহিয়া খান।
মহিলা ভাইস চেয়াম্যান পদে চূড়ান্ত ৫ প্রার্থী হলেন- বর্তমান ভাইস-চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষক সেলিনা বেগম, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহানারা রোজী, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসা: মিনাআক্তার, মোছা: ফাতেমা বেগম, যুবমহিলা লীগ নেত্রী সুমি আক্তার।
উপজেলার নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩শ ৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪শ ২৪ জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৩২ হাজার ৮ শ ৯৪ জন এবং হিজড়া ভোটার ৬ জন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ৯৬টি কেন্দ্রে আগামী ৫ জুন সকাল ৮টা হতে বিরতিহীন ভাবে ভোট চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
একুশে সংবাদ/আ.গো.উ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :