বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় হাসপাতাল সড়কে আগুনে পুড়ে গেছে অনুমোদিত জ্বালানি তেল বিক্রির দোকানসহ বাসার কিছু অংশ। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮ টি ইউনিট ৪ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ সময় ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য সামান্য আহত হন। শনিবার (১ জুন) দিনগত রাত ১১টার দিকে শেরপুর শহরের হাসপাতাল সড়কে ঘটনাটি ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল প্রামাণিকের ৩ তলা এই ভবনের নিচতলায় ছিল দোকানটি। দোকান মালিক ব্যবসায়ী রফিকুল আলম জিন্নাহ। ২য় তলায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের কার্যালয় এবং ৩ তলায় ভবনের মালিক বসবাস করেন। অনুমোদনহীন এই দোকানে গ্যাসভর্তি সিলিন্ডার, ট্রাক ও বাসের চাকার টায়ার, পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও মোবিল বিক্রি করা হতো।
শনিবার (১ জুন) দিনগত রাত সোয়া ১১টার দিকে হাসপাতাল সড়কে ‘লিমন এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি দোকানে আগুন লাগে। সংবাদ পেয়ে শেরপুর, ধুনট, শাজাহানপুর, বগুড়া সদর ও সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘ চেষ্টার পর রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অনুমোদিত দোকানের পাশেই ছিল নেসকো বিদ্যুৎ সরবরাহের ৩৩ কেভির বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন। নিরাপত্তার স্বার্থে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত পুরো শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। প্রায় ৩ মাস আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে অনুমোদনহীন এই দোকান মালিককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে আইন অনুযায়ী দোকানের মালামাল ও গুদাম অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালতের বিচারক। কিন্তু দোকান মালিক আদালতের নির্দেশ উপক্ষো করেই বে-আইনী ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।
বগুড়া ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, সংবাদ পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেন তারা। শেরপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউস পরিদর্শক বখতিয়ার উদ্দিন জানান, তার বগুড়া ইউনিট ছাড়াও শেরপুর, পার্শ্ববর্তী শাজাহানপুর, ধুনট ও রায়গঞ্জ ফায়ার স্টেশনের কর্মীদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার সময় বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য সামান্য দগ্ধ হয়েছেন। আগুনে বে-আইনি এই দোকানসহ দোকানসহ ভবনটির ৩ তলায় বাড়ির মালিকের ঘরের কিছু মালামালও পুড়েছে। আগুন লাগার সঠিক কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়া গেলেই আগুণ লাগার কারণ ও ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টি বলা সম্ভব হবে বলে।
এদিকে, সকাল থেকেই সরেজমিনে দোকান মালিক রফিকুল আলমকে খুঁজে পাইনি পুলিশ। মুঠোফোনে ফোন করা হলে তাঁর বন্ধ পাওয়া যায়। ভবনের ২য় তলায় অবস্থিত সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এর উপ-শাখার ইনচার্জ আবু সাঈদ জানান, আগুনে ব্যাংকের ভেতরে কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে আগুন লাগার কারণে ভবনটি এখন বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
অপরদিকে, শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন জিহাদী জানিয়েছেন, অনুমোদন না থাকায় ৩ মাস আগে ওই প্রতিষ্ঠানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে মহাসড়কের পাশ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অনুমোদনহীন জ¦ালানি তেল বিক্রির এসব বে-আইনী ও অবৈধ প্রতিষ্ঠানেরগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :