ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে পিরোজপুর জেলার উপকূলীয় উপজেলা কাউখালীর শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী জোলাগাতী ইসলামিয়া ফাজিল ( ডিগ্রি) মাদ্রাসার টিনসেড বিল্ডিং এর ছয়টি ক্লাসরুম, অধ্যক্ষর কক্ষ, বঙ্গবন্ধু কন্যার ও একটি কাঠের ঘরের ক্লাসরুম, কম্পিউটার, রুমের আসবাবপত্র সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। শ্রেণিকক্ষের লেখাপড়ার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে এখন নিতে হচ্ছে খোলা আকাশ ও টিনের চাল উড়ে যাওয়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত শ্রেণিকক্ষে নিচে পাঠদান।
১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত উপজেলার পুরাতন মাদ্রাসাটিতে নূরানী বা শিশু শ্রেনি থেকে ফাজিল (ডিগ্রি) পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী দুটি সীমান্তবর্তী উপজেলা ভান্ডারিয়া, রাজাপুরসহ শিয়ালকাটি ইউনিয়নের ৯ গ্রামের ৭০০ ছাত্র-ছাত্রী নিয়মিত পাঠ দান করে আসছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসায় পুরানো আমলের লম্বা একটি মাত্র টিনের ঘর, ২ রুম বিশিষ্ট একটি পাকা ঘর, ৫ পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বহুতল ভবনের কাজ চলছিলো। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে কারণে এসব ঘরের টিনের ছাউনি উরে যায়। টিনসেট লম্বা যে শ্রেণিকক্ষটিতে নিয়মিত ক্লাস হতো সেটি গাছ পড়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে মাদ্রাসাটিতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাফিসা আক্তার বলে, ঘূর্ণিঝড় আমাদের মাদ্রাসা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সামনে আমাদের পরীক্ষা। ক্লাস না করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। তাই রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে আমাদের ক্লাস করানো হচ্ছে। অতিদ্রুত আমরা মাদ্রাসার ভবন চাই।
অভিভাবক মো আবুল বাশার জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পুরো মাদ্রাসাটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। সামনে পরীক্ষা। তাই এখন শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কোন সিগনাল পেলে গ্রামবাসী গবাদিপশু নিয়ে মাদ্রাসার পাকা বিল্ডিং এসে আশ্রয় নেয়। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি এই মাদ্রাসায় একটি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করা হোক।
শিয়ালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সিদ্দিকুর রহমান জানান, এটা একটি এই অঞ্চলের পুরাতন মাদ্রাসা আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহিম বলেন, শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় যেন পিছিয়ে না পারে তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে, ভেঙে পড়া জরাজীর্ণ ভবনে, মসজিদের বারান্দায় ও এতিমখানায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। যেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পাঠদানে অংশ নিতে পারে।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এডভোকেট হুমায়ুন কবির তালুকদার রাজু বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মাদ্রাসাটির আধুনিক ভবন সহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ সজল মোল্লা বলেন, শিক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতিগ্রস্ত মাদ্রাসটি পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টি দেখা হবে।
একুশে সংবাদ/ব.শি.জে/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :