AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বগুড়ায় স্ত্রী ও শিশুকে গলা কেটে হত্যা, আদালতে সেনা সদস্যের স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দী


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি, বগুড়া
০৫:২০ পিএম, ৪ জুন, ২০২৪
বগুড়ায় স্ত্রী ও শিশুকে গলা কেটে হত্যা, আদালতে সেনা সদস্যের স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দী

বগুড়ার শাজাহানপুরের বনানীতে ‘শুভেচ্ছা’ আবাসিক হোটেলে স্ত্রী আশামনি (২০) ও শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ আল রাফি (১)কে গলা কেটে হত্যা ঘটনায় গ্রেপ্তার আশামনির স্বামী সেনাসদস্য আজিজুল হক (২৩) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ সময় হত্যাকান্ডের সম্পূর্ণ বিবরণ দেন আদালতে। আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (পরিদর্শক) মোসাদ্দেক হোসেন ও শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।


পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নারী আশামনি বগুড়া শহরের নারুলী আকাশতারা এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে। আশামনির স্বামী আজিজুল হক জেলার ধুনট উপজেলার হেউটনগর গ্রামের হামিদুর রহমানের ছেলে। প্রায় ৩ বছর আগে আশামনির সঙ্গে বিয়ে হয় আজিজুল হকের। দাম্পত্য জীবনে তাদের একমাত্র ছেলে সন্তান আব্দুল্লাহ আল রাফি। আজিজুল হক আদালতকে জানিয়েছেন, স্ত্রী আশামনির সঙ্গে তার মা-বাবার বনিবনা ছিলনা। ঝগড়াবিবাদ লেগেই থাকতো। সাংসারিক অশান্তির কারণে তিনি স্ত্রীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মতো শনিবার (১ জুন) কেনাকাটা করে দেওয়ার কথা বলে বিকেলে শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে শহরে বের হন। আসার পথেই একসময় শহর থেকে গরু জবাই করা একটি ধারালো ছুরি ক্রয় করেন। এরপর স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭ টার দিকে বনানী ‘শুভেচ্ছা’ হোটেলে ওঠেন। দিনগত রাত সাড়ে ৮ টার দিকে পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রী আশামনিকে বাথরুমে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ বস্তায় ভরে। স্ত্রীকে হত্যা করার সময় শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ আল রাফি বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল। স্ত্রীকে হত্যা করার পর তিনি হোটেলের নিচে নেমে কিছুক্ষণ পরে আবার হোটেলের কক্ষে ফিরে গিয়ে ঘুমন্ত শিশু সন্তানের কাছে কিছু সময় বসে ছিলেন। ভাবছিলেন, মাকে তো হত্যা করা হয়েছে, এখন শিশুটি কার কাছে থাকবে, এ নিয়ে চিন্তায় পরে যান আজিজুল। কিছুক্ষণ পর শিশুটি ঘুম থেকে জেগে উঠে মাকে না পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। একপর্যায়ে জানাজানির ভয়ে ধারালো চাকুর আঘাতে নিজের শিশুসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করে দেহ মাথা আলাদা করে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। এরপর শিশু আব্দুল্লাহ আল রাফির খন্ডিত মাথা ব্যাগে ভরে হোটেল কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে শহরের ফতেহ আলী রেলসেতু থেকে করতোয়া নদীতে ফেলে দেন। সোমবার (৩ জুন) বিকেলে বগুড়ার সংশ্লিষ্ট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফসানা রিমার কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আজিজুল হক।


এর আগে জোড়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় সেনাসদস্য আজিজুল হককে প্রধান আসামি করে শাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত আশামনির বাবা আসাদুল ইসলাম। মামলায় আজিজুল হকের বাবা হামিদুর রহমানসহ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী সোমবার (৩ মে) আটক আজিজুল হক ও তার বাবা হামিদুর রহমানকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।


এদিকে, জেলা বগুড়ার গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক (ওসি/ডিবি) মোস্তাফিজ হাসান জানিয়েছেন, শাজাহানপুর উপজেলাধীন বনানীতে শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যা ঘটনায় শিশুর খন্ডিত মাথা উদ্ধার করা যায়নি। রাজশাহী থেকে আসা ডুবুরি দল সোমবার (৩ মে) ২য় দফায় সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত করতোয়া নদীতে চার ঘন্টা অনুসন্ধান চালিয়েও শিশু আব্দুল্লাহ আল রাফির খন্ডিত মাথার কোন সন্ধান করতে পারেনি। পরে তারা বাধ্যহয়ে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন।


অন্যদিকে, শিশুটির খন্ডিত মাথা পাওয়া গেলে তদন্ত কাজে সুবিধা হতো বলে মতামত দিয়েছে থানা পুলিশ। তাই এখনও শিশুর খন্ডিত মাথার সন্ধানে নানারকম কৌশল ও পদ্ধতি ব্যবহার করছে পুলিশ। ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মরদেহের মাথার অংশবিশেষ না পাওয়া গেলে আইনগত ভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে নিহতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে কিছুটা অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ময়ণাতদন্তের পুরো বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।


রবিবার (২ জুন) সকাল ১১টার দিকে বগুড়ায় শাজাহানপুর উপজেলার বনানীতে শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলে স্ত্রী আশামনি শিশু আব্দুল্লাহ আল রাফির গলাকাটা লাশ উদ্ধারকরে থানা পুলিশ। 


একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!