বগুড়ায় জ্বলানী তেলের দোকানে অগ্নিকান্ডে ১ জনের মৃত্যু

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বাণিজ্যিক ভবনে অনুমোদিত জ্বালানী তেলের দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে রহমত আলী (৩২) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রহমত তেলবাহী লরি চালকের সহকারি ও সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বোঙ্গাবাসর গ্রামের আহসান সরদার ওরফে আসান আলীর ছেলে। এ ঘটনায় নিহত রহমত আলীর ভাই রফিকুল বাদি হয়ে দোকান মালিক রফিকুল আলমসহ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা নথিভূক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার (৪ জুন) বিকেলে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন জানান, পলাতক থাকায় দোকান মালিককে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও মরদেহ পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত ট্রাক জব্দ করাসহ ট্রাকচালক আনোয়ার হোসেন (৩৭) ও সহকারি শিপন আহমেদ (২৫)কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

শনিবার (১ জুন) দিনগত রাত ১১ টার দিকে উপজেলার হাসপাতাল সড়কে ‘দুলাল কমপ্লেক্সে’ আগুনে পুড়ে গেছে মিনি জ্বালানী তেলের ডিপো বলে পরিচিত ‘লেমন এন্টারপ্রাইজ’ নামের অনুমোদিত বেআইনী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বাসার কিছু অংশ। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮ টি ইউনিট ৪ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি শহিদুল ইসলাম ও আছের আলী আহত হয়ে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য সামান্য আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র দাবি করে, ঘটনার পরদিন রবিবার (২ জুন) দুপুরের পর ২ ব্যক্তি আগুনে ভস্মীভূত হওয়া ভবনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় তারা মানুষের হাড়, চামড়া দেখতে পেয়ে পরিষ্কার না করে ঘটনাটি ব্যবসায়ী ও ভবন মালিক পক্ষের লোকজনকে জানান। এরপর মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ট্রাকে তুলে শাহজাদপুরে নিয়ে যান আটক আনোয়ার হোসেন ও সহকারি শিপন আহমেদ। ঘটনাটি সন্দেহজনক হওয়ায় ট্রাকচালক ও তার সহকারিকে আটক করে শেরপুর ও শাহজাদপুর থানা পুলিশে সংবাদ দেন স্থানীয়রা। এরপর শেরপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে শাহজাদপুর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠান এবং মরদেহ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক জব্দ করাসহ ট্রাকচালক আনোয়ার হোসেন ও সহকারি শিপন আহমেদকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।

শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম রেজা জানান, আগুন লাগা ভবন থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহ কেন গুম করার চেষ্টা হয়েছে, সেটি অনুসন্ধানে কাজ করেছে পুলিশ। পাশাপাশি দুইজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

একুশে সংবাদ/বিএইচ