বগুড়ায় ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন (৪র্থ ধাপ) শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নির্বাচন মাঠে আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্যকোন দলের অংশগ্রহণ না থাকায় ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। অনেকটা নিরানন্দ ভোটগহণে দুপুর ২ টা পর্যন্ত ভোট পরেছে ৯ শতাংশ। অপ্রীতিকর কোন ঘটনা না ঘটলেও নির্বাচন চলাকালে কেন্দ্রের ভিতর ভোটারদের প্রভাবিত করা এবং ভোটপ্রদানে ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপ দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে মোবাইল ফোনসহ ৩ উপজেলায় ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে শেরপুর উপজেলায় ৬ জন, ধুনট উপজেলায় ৩ জন এবং নন্দীগ্রামে ৯ জন।
বুধবার (৫ জুন) দিনগত রাত ১২ টায় ফলাফল ঘোষণা করেন শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার মোঃ সুমন জিহাদী। ভোট গণনায় জটিলতা হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ৪০ হাজার ১৮০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শাহ জামাল সিরাজী (মোটরসাইকেল)। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ সুলতান মাহমুদ (আনারস) পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৭৫১ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৭ হাজার ৫০৯ নূরে আলম সানি (তালা) নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ তাজুল ইসলাম (টিউবওয়েল) পেয়েছেন ১৯ হাজার ২৮২ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩১ হাজার ৮৮৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন মোছাঃ শিখা খাতুন (হাঁস), নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোছাঃ ফাতেমা খাতুন ময়না (কলস) পান ১৯ হাজার ৯৬৩ ভোট।
রাত ১০টায় উপজেলা সহকারি রিটার্নিং অফিসার মোঃ আশিক খান এবং ধুনট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নুরজাহান খাতুন জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪০ হাজার ৬০ ভোট পেয়ে আসিফ ইকবাল সনি (আনারস) বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টিআইএম নুরুন্নবী তারিক (ঘোড়া) পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৬২ ভোট। এছাড়া ৪৩ হাজার ৬৪৮ ভোট পেয়ে ইকবাল হোসেন রিপন (তালা) ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চপল মাহমুদ (টিউবয়েল) পেয়েছেন ৩২ হাজার ২৭৬ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩১ হাজার ৬৯৯ ভোট পেয়ে সুলতানা জাহান (সেলাই মেশিন) নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রেবেকা সুলতানা রেবা (ফুটবল) পান ২৩ হাজার ৭০৩ ভোট।
ধুনটে শঙ্কা কাটিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বুধবার (৫জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জনসহ সর্বমোট ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন। এ উপজেলায় ৯০টি কেন্দ্রের ৬৮৭ টি কক্ষে ৯০ জন প্রিসাইডিং, ৬৮৭জন সহকারি প্রিসাইডিং ও ১ হাজার ৩৭৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেন। ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈকত হাসান জানান, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ভোটাররা যাতে অনুকুল পরিবেশে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন সেজন্য কেন্দ্রগুলোতে ছিল ৬ স্তরের নিরাপত্তা। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ৪ জন অস্ত্রসহ পুলিশ (১ জন এসআই/এএসআই ও ৩ জন কনস্টেবল), ২ জন অস্ত্রসহ আনসার ও নারী পুরুষ সমন্বয়ে ১০ জন লাঠিসহ আনসার ভিডিপি সদস্য মোতায়েন ছিল। পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে ৩ প্লাটুন বিজিবি এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক র্যাব ও গোয়েন্দা (ডিবি) সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে রাত পৌনে ৯ টার দিকে নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার হুমায়ুন কবির নির্বাচনের ফলাফল নিশ্চিত করেন। ঘোষিত ফলাফলে নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪১ হাজার ৩৭৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা (মোটরসাইকেল)।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ (আনারস) পেয়েছেন ২৮ হাজার ০৫১ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৬ হাজার ২৯১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল চন্দ্র মহন্ত (মাইক)। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুভ আহম্মেদ (টিউবওয়েল) পেয়েছেন ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট। এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৯ হাজার ৭১৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শ্রাবণী আকতার বানু (হাঁস)। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা বেগম (কলস) পান ২৯ হাজার ৩১৬ ভোট।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :