চাঁদপুরে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশু প্রস্তুত করতে ইতোমধ্যেই ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার খামারিরা। তবে সরকারিভাবে চাহিদা অনুযায়ী ১৭ হাজার ৭৭ টি পশু কম রয়েছে। হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলা সহ জেলায় গরু-ছাগলের হাট-বাজারের সংখ্যা ৪৯ টি। ১৪৩১ বঙ্গাব্দের জন্যে জেলা প্রশাসন ১০ টি শর্তে ঔ সব হাট-বাজারগুলো পবিত্র ঈদুল আযহার জন্যে ইজারা প্রদান করা হয়েছে ।
শর্তগুলো হলো: (১) গরুরহাট পবিত্র ঈদুল আযহার উৎসব পর্যন্ত বসানো যাবে। (২) ইজারা সম্পার্কিত নিিতমালা ২০১১ অনসিরণ করতে হবে। (৩) মহাসড়কে বা জনসাধারনের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে হাট বসানো যাবে না। (৪) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ .খেলার মাঠ ,রেল লাইন ,সড়ক বা মহাসড়কেরবা পাশে হাট বসানো যাবে না। (৫)ক্রেতা-বিক্রেতার একমুখী চলাচল ব্যবস্থা ও বাজার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাকতে হবে। (৬) অনলাইন পশুর হাট আয়োজনে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টারগুলো উদ্যোগী হবে। (৭) শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে হবে। (৮) মহিলা ক্রেতা-বিক্রেতা দের ক্রয়-বিক্রয়ের সুবিধা প্রদান করতে হবে।( ৯) কোরবাণীর পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যাপারে পশু চিকিৎসক থাকতে হবে। (১০) জেলা প্রশাসকের অনুমতি ব্যতীত কোনো হাট বাজার বসানো যাবে না । চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানায়, এ বছর চাঁদপুর জেলায় কোরবানিযোগ্য ৬১ হাজার ৪শ ৮৯টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। অথচ জেলায় চাহিদা রয়েছে ৭৮হাজার ৫শ ৬৬টি পশু। সেখানে বর্তমানে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া মিলে কোরবানি পশু রয়েছে, ৬১ হাজার ৪শ ৮৯টি। এক্ষেত্রে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে ১৭ হাজার ৭৭টি পশু।
কোরবানির জন্য প্রস্তুত থাকা ৬১ হাজার ৪ শ ৮৯টির মধ্যে গরু রয়েছে ৩৩ হাজার ৮শ ৪৩টি, মহিষ ২শ ২৬টি ও ছাগল ২৫ হাজার ৮শ ৭৬টি এবং ভেড়া ১ হাজার ৪শ ২টি রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য পশু রয়েছে ১ শ ৪২টি।
জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের তালিকা মোতাবেক ১শ ৯৬ টির মতো পশুর হাট থাকবে এ জেলায়। এছাড়াও কোরবানী ঈদ উপলক্ষে জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর থেকে পশু হাটে তাদের টিম কাজ করবে। তবে, এক্ষেত্রে ২-৩টি ইউনিয়ন একসাথে মিলে ১ জন ডাক্তার থাকবেন তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় যে পরিমান পশু রয়েছে তাতে কোরবানি ঈদের চাহিদা মেটাতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক। জানা যায়, কোরবানি কে কেন্দ্র করে পশু মালিক, ব্যবসায়ী ও কোরবানী দাতাদের মধ্যে হিসেব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। সাপ্তাহিক হাট, পাড়া-মহল্লায় গরু ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে। শুধু তাই নয়, একটু কম দামের আশায় আগে থেকে অনেকেই অগ্রীম টাকা দিয়ে পশু বায়না করে রাখছেন। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দাবি, পশু খাদ্য বৃদ্ধি ও উৎপাদনে দামের প্রভাব পড়বে গরুর হাটে। চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের থেকে প্রাপ্ত সূত্র মতে- চাঁদপুর সদরে ২৫ টি ও পৌর সভায় ৫টি, ফরিদগঞ্জে ৩৪টি ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় ২টি, মতলব দক্ষিণে ১২ টি ও নারায়ণপুর পেীরসভঅয় ৬ টি,মতলব উত্তরে ১২ টি ,কচুয়ায় ৪১টি এবং হাইমচরে ১০ টিসহ ১৯৬ টি গরু-ছাগলের হাট এবার ঈদুল আযহা উপলক্ষে বসছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক জানান, চাঁদপুরে বিগত বছরের ন্যায় এবারও পশু ক্রয়ে ভালো দাম পাবেন খামারীরা। যেহেতু উৎপাদন খরচ বেশি, এবার দামও কিছুটা বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। কোরবানি উপলক্ষে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক কুরবানি পশু ক্রয় বিক্রয় করার বিষয়ে বলেন, ক্রয়-বিক্রয় করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো গরু দেখে শুনে ক্রয় ও বিক্রয় করতে হবে। যে সকল খামারি ও ব্যবসায়ী বিক্রি করবেন, আপনারা অবশ্যই ভালো গরু বাজারে উঠাবেন। খোঁড়া ও অসুস্থ এবং রোগা গরু বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সম্পূর্ন সুস্থ গরু বাজারে তুলবেন। এছাড়াও যারা পশু ক্রয় করতে যাবেন, অবশ্যই আপনারা ভালো , সুস্থ্য ও সাবলীল পশু দেখেশুনে ক্রয় করবেন। অসুস্থ্য বা রোগা ও খোঁড়া পশু ক্রয় করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। তিনি আরো জানান এবারের কোরবানি ঈদ উপলক্ষে পুরো চাঁদপুর জেলায় পশুর হাটে তাদের ভ্রাম্যমাণ টিম কাজ করবে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :