ঈদ-উল-আযহায় কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুত করতে প্রয়োজন হয় ধারালো ছুরি, চাপাতি, দা, বটির। ফলে বছরের এই সময়ে বাড়তি ব্যস্ততা তৈরি হয় কামারশালায়। কেউ কেউ নতুন করে বানান ছুরি-চাপাতি, আবার কেউ কেউ পুরনোটা ধারালো করে নেন। তবে এ বছর ঈদ ঘনিয়ে এলেও এখনও ব্যস্ততা বাড়েনি ঢাকার ধামরাইয়ের কামারশালাগুলোতে।
সম্প্রতি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ধামরাই বাজার, কালামপুর বাজার, ধানতারা বাজার, কাওয়ালীপাড়া বাজার ও কুশুরা বাজার এলাকায় ঘুরে কামারদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
কামাররা বলছেন, প্রতি বছর কোরবানির আগের কয়েক সপ্তাহ জুড়ে ছুরি-চাপাতি তৈরি ও ধার করানোর কাজ বৃদ্ধি পায়। অনেকেই এই সময়কে কেন্দ্র করে নতুন করে গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল লোহা ও কয়লা কিনে রাখেন। তবে এ বছর এখনও ব্যস্ততা না বাড়ায় শঙ্কায় দিন কাটছে তাদের।
বিক্রেতারা জানান, এ বছর মান ও আকার ভেদে ৬০০-৮০০ টাকা দরে প্রতি কেজির একেকটি চাপাতি, দা, বটি বিক্রি হচ্ছে। আবার অনেক সরঞ্জাম বিক্রি হচ্ছে পিস হিসেবে। ছোট ছুরিগুলো ১৫০-৩০০ টাকা ও জবাইয়ের ছুরি ৫০০-১০০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
কুশুরা বাজারে প্রায় ৩৫ বছর ধরে কামারশালা পরিচালনা করছেন রবি কর্মকার। তিনি বলেন, ‘বেচা-কেনা নেই। ৫টা চাপাতিও বিক্রি করতে পারিনি। তবে ঈদ ঘনিয়ে এলে হয়তো কিছুটা ক্রেতা বৃদ্ধি পেতে পারে।’
এদিকে বেচা-কেনা কম হওয়ার পেছনে লোহা ও যন্ত্রপাতির দাম বৃদ্ধি পাওয়াকে দায়ী করেছেন অনেকই। ধামরাই বাজার এলাকায় কামারশালার শ্রমিক নয়ন সরকার বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর সব সরঞ্জামের মূল্য ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে। লোহা, কয়লা ও কামারের মজুরি বৃদ্ধির কারণে ছুরি-চাপাতির দাম বেড়ে গেছে। ফলে একেবারে প্রয়োজন ছাড়া কেউ এসব কিনছেন না।’
কাওয়ালীপাড়া বাজার এলাকার প্রশান্ত কর্মকার বলেন, ‘বছর জুড়েই কম বেশি লোহার এসব পণ্য বিক্রি হয়। তবে কোরবানির ঈদে নতুন ছুরি, চাপাতি, চাকুর চাহিদা বাড়ে। ফলে আগেই কিছু জিনিসপত্র বানিয়ে রাখা হয়। কিন্তু এবার এখনও বিক্রি বাড়েনি।’
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খান মো. আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, ‘আমরা আগেও কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতা করেছি। ভবিষ্যতেও আমরা তাদের বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেব। সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :