ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে তারাকান্দা উপজেলায় চলছে সিএনজিচালিত অটোয় ভাড়ার নৈরাজ্য। যেখানে ভাড়া নেওয়ার কথা ৩০-৪০ টাকা, সেখানে নেওয়া হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকা। যারা বাড়তি ভাড়া দিতে রাজি হচ্ছে তাদের নেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় নেওয়া হচ্ছে না। ঈদে যাত্রীদের ব্যক্তিগত কাজ সারতে বাধ্য হয়েই দিচ্ছেন এই বাড়তি টাকা।
শুক্রবার (১৪ জুন) তারাকান্দা টু ময়মনসিংহ রুটের সিএনজি ভাড়ায় এরকম নৈরাজ্য দেখা গেছে। তারাকান্দার যেখান থেকেই যাত্রীরা ওঠেন না কেন, ময়মনসিংহ যেতে হলে দিতে হয় ১৫০-২০০ টাকা। সাধারণ দিনে এই পথের ভাড়া ৩০-৪০ টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ময়মনসিংহ থেকে তারাকান্দা যেতেও যাত্রীদের দিতে হচ্ছে একই পরিমাণ টাকা। সাধারণ দিনে এই রুটে স্থানভেদে ভাড়া ২০ থেকে ৪০ টাকা। বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে চালকদের জিজ্ঞাসা করলে যাত্রীদের সঙ্গে করা হচ্ছে দুর্ব্যবহার।
এ বিষয়ে চালকদের সঙ্গে কথা বললে সবাই এক সুরেই বলেন, ঈদ উপলক্ষে এই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এটাকে ঈদ বোনাস মনে করছেন তারা।
একজন সিএনজি চালক বলেন, অন্য সময় তো এরকম সুযোগ হয় না। আর সব যাত্রীই ঈদে ময়মনসিংহ যাচ্ছে। ওই আনন্দে কিছু টাকা নিতেই পারি। বিষয়টি অন্যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো কেউ বোনাস দেয় না। আমরা এমনেই বোনাস নেই।’
তবে চালকদের এমন আচরণে নিজেদের অসহায় মনে করছেন যাত্রীরা। তারা জানান, এটা বড় ধরনের জুলুম। অথচ দেখার কেউ নেই।
ঈদ উপলক্ষে ময়মনসিংহ থেকে তারাকান্দা যাবেন কলেজছাত্র দীন মোহাম্মদ। ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দিনে দুপুরে ডেকে ডেকে এরকম জুলুম করা হচ্ছে। ঠেকানোর কেউ নেই। ২০ টাকা বেশি নিতে পারে। এর জন্য ১০০-১৫০ টাকা বেশি নিবো! আমরা তো ছাত্র। এতো টাকা তো আমাদের জন্য অনেক।’
শিমুল নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের মনুষ্যত্ব নষ্ট হয়ে গেছে। বিবেক বলতে কিছুই নাই। ২০০ টাকা ভাড়া কেমনে চায় এরা। দেশে সঠিক আইন থাকলে এরকম অন্যায় সহ্য করতে হতো না।
জিম্মি হয়ে আছি, যেতেই হবে, মন্তব্য করে আরাফাত রহমান নামে আরেক যাত্রী বলেন, ওরা সবাই একজোট। এই ভাড়া না দিলে তো কেউ যেতে পারবে না। কী আর করার, ঈদে তো বাড়ি যেতে হবে।
এ বিষয়ে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজনীন সুলতানা বলেন, অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে আমি অবগত নই। এই প্রথম আপনার কাছ থেকে শুনলাম। বিষয়টি আমি যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। দরকার হলে জরিমানা করা হবে।
অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে তারাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়াজেদ আলী বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আমি জানি না। কোন যাত্রী এমন অভিযোগ করেনি। যদি করতো তাহলে ব্যবস্থা নিতাম। তাছাড়া তারাকান্দা বাসস্টেশনে ঈদ উপলক্ষে আমাদের ২টি টিম কাজ করছে। তাদের চোখেও এমন কিছু পড়েনি।
তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কোন চালক যেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে সেদিকে আমরা নজর রাখবো।
একুশে সংবাদ /জাহা
আপনার মতামত লিখুন :