ঈদের আনন্দ শেষ এখন কর্মজীবীদের যথাসময়ে কর্মস্থলে ফেরার পালা। ইতিমধ্যে অনেকেই কর্মস্থল চিরচেনা ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফিরতে শুরু করছেন। কিন্ত কর্মস্থলে ফিরতেও তাদের নানা ভাবে হয়রানী আর বিড়ম্বনার গ্যাড়াকলে পড়তে হচ্ছে বলে জানা গেছে। সেইসাথে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়া। এতে বিশেষ করে স্বল্প আয়ের কর্মজীবীরা পড়েছেন চরম।
শনিবার (২২ জুন) সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা রেল ষ্টেশন ও উপজেলা শহরের বাস কাউন্টার গুলোতে দেখা গেছে কর্মজীবী যাত্রী সাধারনের প্রচন্ড ভিড়। এই সুযোগে বাস মালিকেরা তাদের খেয়াল খুশিমত এসব যাত্রীদের নিকট থেকে নির্ধারিত ভাড়ার ২/৩ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করছেন, বলে যাত্রী সাধারনের মধ্যে এমন অভিযোগ উঠেছে।
টিকিটের দাম চড়া হলেও কেউ কেউ কর্মস্থলে যথাসময়ে পৌঁছাতে নিরূপায় হয়ে বাস কাউন্টার থেকে অতিরিক্ত দামে টিকিট সংগ্রহ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে গাইবান্ধা জেলা বাস কোচ মালিক সমিতির সভাপতির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে এসব বাসের কাউন্টার মাষ্টারেরা বলেছেন, তেলের দাম বেশি হওয়ায় সারা বছরই মালিকদের ব্যবসায় লোকসান গুনতে হয়। বছরে দুটো ঈদে একটু ভাড়া বেশি নিয়ে মালিকেরা কোন রকম ভাবে টিকে আছে।
এদিকে আবার কর্মমুখী অনেকে রংপুর, লালমনিরহাট ও বুড়িমারী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বৈধ পন্থায় না পেয়ে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুন টাকা দিয়ে কালোবাজরীদের কাছ থেকে টিকিট সংগ্রহ করেছেন। কিন্ত এভাবেও বাস কিংবা ট্রেনের টিকিট অনেকে ভাগ্যে জুটছেনা।
কাউনিয়া, পীরগাছা, বামনডাঙ্গা, নলডাঙ্গা ও গাইবান্ধা রেল ষ্টেশনে অপেক্ষামান যাত্রী সাইফুল, শফিকুল, ছায়দার, আগুর, মান্নান, রাজু , শানসাসহ অনেকেই বলেন, কোথাও টিকিট না পেলেও চাকরী রক্ষার্থে কষ্ট করে দাড়িয়ে হোক আর ছাদে হোক তবুও যেতে হবে। কারণ আজকে না গেলে চাকুরী হারাতে হবে। এমতবস্থায় নিরুপায় হয়ে অসংখ্য যাত্রী সাধারন অতি কষ্টে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে, ইঞ্জিনে, দাড়িয়ে ও হ্যান্ডেলে বাদুর ঝোলা হয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছেন।
রবিন ও কোহিনুর বেগম নামের দুই পোশাক শ্রমিক বলেন, ঈদের পরের দিন থেকে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটের জন্য এসব স্টেশনে ২?/৩ দিন ধর্না দিয়েও টিকিট মেলেনি। পরে দ্বিগুন দরে কালোবাজার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে ঢাকায় আসতে পেরেছি।
রেল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, সাধারনত ঈদে টিকিটের চাহিদা ব্যাপক ভাবে বেড়ে যায়। যা চাহিদার চেয়ে বরাদ্দ একেবারে অপ্রতুল। আর কালোবাজারে টিকিট বিক্রি নিয়ে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী সর্বদা সজাগ ও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কোথাও কালোবাজারে কেউ টিকিট বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :