ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সাইম (১০) নামে এক শিশুর জিহবা ও ঠোঁট কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশির বিরুদ্ধে।
রোববার (২৩ জুন) বর্তমানে শিশুটি জিহবা ও ঠোঁটে ৮/ ১০টি সেলাই নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত সাইম নাটঘর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মালেক মিয়ার ছেলে। এর আগে শুক্রবার (২১ জুন) উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ মূল অভিযুক্ত কাউসারকে আটক করেছে।
আহত শিশুর পরিবার জানায়, জায়গার সীমানা নিয়ে সাইমের বাবা মালেক মিয়ার সাথে পাশের বাড়ির কাউসার মিয়ার সাথে নিয়ে এক বছর ধরে বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার সকালে কাউসার মিয়া বিরোধপূর্ণ জায়গার সীমানা খুঁটি তুলে আরেক জায়গায় বসিয়ে দেয়। ঘটনাটি দেখে ফেলে শিশু সাইম। সে তার বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি খুলে বলে। এর কিছুক্ষণ পর বিষয়টি জানতে পেরে সাইম কে খুঁজতে থাকে কাউসার। এক পর্যায়ে সাইম বাড়ি থেকে বের হলে তার উপর দা-লাঠি সোটা নিয়ে হামলা করে কাউসার মিয়া ও তার লোকজনেরা। সাইমকে বেদম প্রহার করে একপর্যায়ে তার জিহবায় ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। তার ঠোঁটের কিছু অংশ কেটে ফেলা হয়। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
আহতের মা পারভীন বেগম বলেন, আমার ছেলের জিহবা ও ঠোঁট নৃশংসভাবে কেটে দেওয়া হয়েছে। এখন সে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। চারদিন হল তাকে কিছু খাওয়াতে পারছি না। এ ধরনের বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না। আমি ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক রতন কুমার ঢালী বলেন, শিশুটির জিহবা ও ঠোঁটে আঘাত প্রাপ্ত হওয়াই তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার জিহবায় সাতটি সেলাই করা হয়েছে। চিকিৎসরা তাকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। বর্তমানে তার অবস্থা উন্নতির দিকে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, দুই প্রতিবেশীর মধ্যে জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় সাইম নামে এক শিশু আঘাত প্রাপ্ত হয়ে জিহবার একটি অংশ কেটে যায় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানতে পেরেছি। বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর প্রাথমিক তদন্ত শেষে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত মূল অভিযুক্ত কাউসারকে আটক করা হয়েছে। দুপুরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের আমিনপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়। ভূক্তভোগী পরিবারকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ স্বাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :