কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। গত ২ সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ মিটার বাঁধের রাস্তা ও শতাধিক বিঘা আবাদি জমি এবং অর্ধ শতাধিক বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাবে ১টি স্লোইস গেট ও ১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
একটু দুরেই রয়েছে ১টি মসজিদ সেটিও যেকোনো সময় বিলীন হতে পারে তিস্তা গর্ভে। ভাঙ্গন কবলিত অসহায় মানুষেরা বসতবাড়ী রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থার দাবী জানান।
শুক্রবার (২৮ জুন) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বজরা ইউনিয়নের সাদুয়া দামার হাট ও খামার দামার হাট গ্রামের ভাঙ্গন কবলিতদের নিজস্ব জমি জমা না থাকায় তারা তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ঈদুল আজহার এক সপ্তাহের আগ থেকেই এই এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হলে বজরা ১নং খামার দামার হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্লোইস গেট হুমকির মুখে পড়ে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ না নিলে যেকোনো মুহূর্তে স্কুল ও স্লোইস গেটটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে ৫০/৬০টি বসতবাড়ী, ৫০ মিটার বাঁধের রাস্তা, সবজিক্ষেত, পাট ক্ষেত, গাছপালা পুকুরসহ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
নদী তীরবর্তী খামার দামার হাট গ্রামের আবুল হোসেন (৫৬) জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ভাঙনে ঠিকানা হারিয়েছে অর্ধ শতাধিক পরিবার। ২/৩ শতাধিক বসতবাড়ী ও একটি মসজিদ রয়েছে ভাঙনের হুমকিতে।
এছাড়াও পিছনে আরো শত শত পরিবার রয়েছে ভাঙ্গন আতংকে। বজরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরদার (৭০) জানান, আমি ১৫০ একর জমির মালিক। নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি ১২ বার। নদীর বুকেই আমার সমস্ত জমিজমা পড়ে আছে। অথচ আমাদের ঠাঁই নেয়ার মতো জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে অন্যের জমি ৮ বছরের জন্য বন্ধক নিয়ে বাড়ি ঘর করে পরিবার পরিজন নিয়ে আছি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, সম্প্রতি ভাঙন কবলিত এলাকা আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করেছেন, এখন পর্যন্ত কোন কিছু বলেনি। অনুমতি পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :