বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ছোনকা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারি নিয়োগে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। তবে স্থানীয়দের কঠোর অবস্থানের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া। অভিযোগের তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের।
সূত্র দাবি করে শুক্রবার (২৮ জুন) বিকাল ৪ টা থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ ৪ পদে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টাকা লেনদেনসহ দূর্নীতির অভিযোগ এনে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের দাবিতে স্থানীয় এলাকাবাসী বিকেল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত বিদ্যালয় চত্ত্বরসহ সামনের সড়কে কঠোর অবস্থান নেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছাড়া অধিকাংশ সদস্যরা স্থানীয়দের সঙ্গে দূর্ণীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এসময় উপস্থিত সকলেই তীব্র ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ক্ষতিগ্রস্থ একজন জানান, শুক্রবার প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ ৪ পদের বিপরীতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন নিয়োগ প্রত্যাশী ৩৬
প্রার্থী।
এসময় বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোছাঃ খুরশিদী খুদা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফেরদৌস জামান উপস্থিত ছিলেন না। তবে নিয়োগে দূর্নীতির মাধ্যমে ঘুষ বানিজ্য সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত নিয়োগ কমিটির অন্য সদস্য- মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধি, বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশিদ, শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি শেরপুর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম বিদ্যালয় চত্বরে উপস্থিত হননি।
কমিটির অভিভাবক সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, নিয়োগ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ফেরদৌস জামান কমপক্ষে অর্ধকোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য করেছেন। উপজেলার চন্দিপুর গ্রামের বাসিন্দা ফয়সাল আবির জানান, কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছেন সভাপতি ফেরদৌস জামান।
পরবর্তীতে একই পদে বেশি টাকা দিয়ে চাকুরি প্রত্যাশী পাওয়া গেলে ওই পদে অন্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া করেছেন সভাপতি। এ বিষয়ে তার কাছে সকল তথ্যপ্রমাণ সংরক্ষিত রয়েছে বলেও দাবি ক্ষতিগ্রস্থ নিয়োগ প্রত্যাশী ফয়সাল আবিরের।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তার দাবি, নিয়োগ প্রত্যাশীদের একজন ফয়সাল আবিরের কাছ থেকে তিনি ব্যবসায়িক কারণে টাকা ধার নিয়েছিলেন। কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত না হওয়ায় ২৮ জুনের নিয়োগ পরীক্ষাটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করে সকলকে জানানো হবে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন জিহাদী এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগের তদন্ত করে যথাযথ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :