AB Bank
ঢাকা শনিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

‘জাফরুল্লাহ চৌধুরির দূরদৃষ্টিতে দেশে জনকল্যাণের ওষুধনীতি’


Ekushey Sangbad
নাজমুল করিম, সাভার, ঢাকা
০৪:২৮ পিএম, ৬ জুলাই, ২০২৪
‘জাফরুল্লাহ চৌধুরির দূরদৃষ্টিতে দেশে জনকল্যাণের ওষুধনীতি’

ওষুধনীতি প্রণয়নে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ছিল দূরদৃষ্টি। ফলে এটি জনগণের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারছে। এই নীতির কারণে ওষুধ প্রস্তুত ও ওষুধের তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত হয়েছে। শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ১০টায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ অডিটোরিয়ামে এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা (উবিনীগ)-এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আকতারের সঞ্চালনায় ‘জাতীয় ওষুধনীতি ১৯৮২ প্রনয়নের ৪২ বছর: অর্জন ও ভাবনা’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজী বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘জাফরুল্লাহ স্যারের দূরদৃষ্টি, দেশের প্রতি ভালবাসা, দূঢ় মনোবল সবগুলো অন্তর্ভুক্তির কারণে ওষুধ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি শুধু টেকনিক্যাল কমিটিতে সীমাবদ্ধ না থেকে কমিটি হয়ে গেল গণ মানুষের ঔষধ বিষয়ক কমিটি। তখন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ঔষধ সম্পর্কিত তথ্য গোপন রাখা হতো এবং অন্যায় ভাবে মুনাফা অর্জন করত। সেই সব গোপন তথ্য সংগ্রহ করে নতুন ভাবে নীতিমালা প্রণয়ন করা জনগণের কল্যাণে।

তিনি বলেন, জাতীয় ওষুধ নীতির ১৬টা নীতিকে দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। ক্ষতিকর অকার্যকর ঔষধ নিষিদ্ধ করা হয় এই নীতিমালার মাধ্যমে। পৃথিবীর ইতিহাসে যেখানে ১৭টি ওষুধ নিষিদ্ধ করা কঠিন হয়ে যায় সেখানে ১৭৪২ ওষুধ নিষিদ্ধ করে এই কমিটি। জাতীয় ওষুধ প্রণয়ন কমিটি বাজারে শুধু মাত্র কার্যকারী ওষুধ রাখতে নীতি প্রণয়ন করে বাকি গুলা নিষিদ্ধ করে এতে করে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ওষুধ বাণিজ্য কমে যায়। ফ্যাক্টরি ভাড়া করে বিদেশি কোম্পানি এদেশে ওষুধ তৈরি করতে পারবে না, এতে করে স্থানীয় কোম্পানি গুলো ওষুধ তৈরিতে ধীরে ধীরে কার্যকর হতে থাকে। ৮২ ওষুধ নীতি যে লক্ষ্যে অর্জন করা হয়েছে ৪২ বছর পর তা কতটুকু কার্যকর হচ্ছে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ওষুধ নীতির কার্যকর করতে হবে।

তিনি বলেন, ঔষধের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিজ্ঞান যেখানে অস্পষ্ট সেখানে তুমি গরীবের পক্ষ অবলম্বন করো। ঔষধ প্রনয়ণে তিনি সমতা ও ন্যায্যতার প্রতিষ্ঠার পক্ষে ছিলেন। বারবার পরাজয়, শেষ কথা নয়। আমরা এখন ই শুরু করি। সাধারণ মানুষের পক্ষে ৪২ বছর পরে আসুন আমরা সবাই সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক ও সাবেক ডিন অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, নবীন প্রজন্মের জন্য প্রবীন পাঠকদের নিয়ে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য ও ঔষধ এগুলো মুক্তিযুদ্ধের অংশ। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ে নুরুল ইসলাম ছিলেন একজন কিংবদন্তি। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে সরকার যেভাবে সাহায্য করেছিলেন তাতে সেসময় দেশীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অনেক ক্ষতি হয়েছিল। অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর ঔষধ আমদানি করা যাবে না। পাকিস্তান আমলে দেশে ৭-৮ কোটি লোক ছিলো তাই তখন দেশে ঔষধ কোম্পানি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন ছিল। ঔষধের ক্ষেত্রে সমাজতন্ত্রের প্রয়োজন সেটি তখন ভাবা হতো। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে ভাবা হতো যে, ঔষধের ক্ষেত্রে সমাজতন্ত্রের প্রয়োজন নেই। সেসময় সাপ্তাহিক বিচিত্রার সাথে মুক্তিযুদ্ধের মিল ছিলো অনেক বেশি।

তিনি বলেন, অতীতে আমাদের আগে কাঁচামাল তৈরি হতো না অথচ বিদেশী কোম্পানিরা সরকারের কাছে অনুমতি নিয়েছিলো দেশে কাঁচামাল বানানোর। কিন্তু তারা কথা রাখে নি। ১৯৮০ সালে  তারা শুধু বলেছিলো দেশে গ্লুকোজ তৈরি যাবে। পরবর্তীতে তারা টাকা নিয়ে চলে গেছে। ঔষধের যে ইতিহাস তা স্বদেশী আন্দোলনের মাধ্যমেই শুরু হয়।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ৯৮% ঔষধ তৈরিতে আমরা সক্ষম। দেশে ৩৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি পড়ানো হয় এবং অসংখ্য মেডিকেল কলেজ থাকলেও সেরকম ভাবে ঔষধনীতি নিয়ে আয়োজন করা হয় না। আমাদের সকলেরই এই নিয়ে কাজ করা দরকার।

বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ডা. কাজী ইকবাল বলেন, ওষুধ নীতির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ওষুধ হবে সহজ লভ্য এবং কার্যকার যা সাধারণ মানুষের কল্যাণে তৈরি করা হবে। ওষুধ তৈরি করতে হবে নিজের দেশে এবং স্থানীয় ওষুধ কোম্পানিকে প্রোমোট করতে হবে। এই নীতি বাস্তবায়ন করা একটা বিশাল মাইলফলক ব্যাপার। তবে কিছু সমস্যার কারণে স্থানীয় কোম্পানি গুলোকে সম্পূর্ণভাবে প্রোমোট করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতি বাস্তবায়নের আগে বাহির থেকে প্রচুর ওষুধ আনতে হতো যার জন্য ওষুধ এর দামও বেশি ছিল। মাল্টিন্যাশনাল ওষুধ কোম্পানি গুলো বেশি মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে ওষুধ বাজারজাত করতো পরবর্তীতে ৮২ সালের ওষুধ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে এসব ওষুধ বাণিজ্য কমতে থাকে।

এ সময় সেমিনারের শেষ সময়ে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. শিরিন হক, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. লায়লা পারভিন বানু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ডায়ালাইসিস সেন্টারের সাবেক উপ পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী এবং ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. আবুল কাশেম চৌধুরী, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, ডা. মনজুর কাদির আহমেদ, ডা. কণা  চৌধুরী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন,  ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. আবুল বাশার, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. বিশ্বজিৎ, ওয়াটার এইডের রিজিওনাল পরিচালক ডা. মো. খায়রুল ইসলাম, গণ বিশ্ববিদ্যালয় ও গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

 

একুশে সংবাদ/সা.আ

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!