উন্নত জীবনের আশায় প্রবাসে গিয়ে মাফিয়াদের হাতে আটক হয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে মোঃ মকবুল ঠাকুর (মুকুল ঠাকুর) নামক এক ব্যক্তি। অসুস্থ স্বামীকে মুক্ত করতে বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়ে অবশেষে আদালতের শরনাপন্ন হয়েছেন স্ত্রী মোছাঃ নাসিমা বেগম। দাবীকৃত কোটি টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েই যাচ্ছে লিবিয়ায় অবস্থানরত মাফিয়ারা। মুকুল ঠাকুর ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের মৃত হাসেন ঠাকুরের পুত্র।
আদালতে দেওয়া নালিশী মামলা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মুকুল ঠাকুর স্বল্প বেতনে লিবিয়াতে কাজ করে খালি হাতে দেশে ফিরেছেন। এই সুযোগে পার্শ্ববর্তী হারুন ফকির, অহিদ ফকির, শান্ত ফকির, লালমিয়া ফকির ও মুছা ফকিরসহ কয়েকজন ভালো বেতনের বিনিময়ে পুনরায় লিবিয়া যেতে বলে। মুকুল ঠাকুর সরল মনে সব কিছু বিশ্বাস করে পুনরায় লিবিয়াতে পাড়ি জমায়। এর কিছু দিন পর হঠাৎ করে হারুন ফকির ও শান্ত ফকির লিবিয়ায় যায়। সেখানে তারা নিয়মিত মুকুল ঠাকুরের সাথে যোগাযোগ করে।
সর্বশেষ গত ১৬জুন, ২০২৪ তারিখে হারুন ফকির ও অহিদ ফকির মুকুল ঠাকুরের কর্মস্থলে যায় এবং মুকুল ঠাকুর কে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে যায়। সেখানে নিয়ে মুকুল ঠাকুরকে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেয়। যেখানে মুকুল ঠাকুর অমানবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বিচারের আশায় মোঃ মকবুল ঠাকুর (মুকুল ঠাকুর) এর স্ত্রী মোছাঃ নাসিমা বেগম(৩৪) বিগত ইং ২৪ জুন, ২০২৪ তারিখে ফরিদপুরের বিজ্ঞ মানব পাচার প্রতিরোধ দমন ট্রাইব্যুনালে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ এর ৩/৬/৬/৯/১০ ধারায় একটি মোকদ্দমা দায়ের করে। নির্যাতনের ফলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ইতিমধ্যে পচন ধরেছে। ফলে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া দরকার। তবে মাফিয়াদের কথা মত এক কোটি টাকা না দিলে মুক্তি মিলবে না বলে পরিবারের সদস্যরা জানায়। মাঝে মাঝে মাফিয়ারা মুকুল ঠাকুর কে নির্যাতনের বর্ণনা দিলে পরিবারের সদস্যরা হাহাকার করে উঠে। এই ঘটনা দ্রুত মুকুল ঠাকুরকে উদ্ধার ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছে পরিবার ও স্থানীয়রা।
এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায় নাই। এরমধ্যে হারুন ফকির, শান্ত ফকির ও ফকির প্রবাসে লিবিয়াতে আছে বলে জানায়। লালমিয়া ফকির ও মুছা ফকির বাইরে কাজে গেছে বলে জানা যায়। হারুন ও শান্ত দালালের হাতে আটক থেকে মুক্তি পেয়ে বর্তমানে গোপনে লিবিয়াতে আছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে জোর চেষ্টা করছে পরিবার। তারা মুকুল ঠাকুরকে বিদেশে পাঠানো ও মাফিয়াদের কাছে বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এই বিষয়ে সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান (পিপিএম) বলেন, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলা রুজুর পর তদন্ত সাপেক্ষে বিজ্ঞ আদালতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করবে ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :