রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ ইউপির উপনির্বাচনে দুইজন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহার করেছেন বলে নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। বুধবার (১০ জুলাই) প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল, দুপুরের আগে নির্বাচন অফিসে দুই প্রার্থী উপস্থিত হয়ে প্রার্থী তা প্রত্যাহার করেন। তিনজন প্রার্থীর মধ্যে দুজন প্রত্যাহার করায় একজন প্রার্থী অবশিষ্ট রইল।
সে হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হচ্ছেন সুফি কামাল মিন্টু। অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা না হলেও মিন্টুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যানসহ নেতারা মিন্টু কে মিষ্টি খাওয়ানো, মালা গলায় পড়ানো ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, বুধবার প্রত্যাহারের শেষ দিনে মোসলেম আলী প্রামানিক ও মাসুদ করিম তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন। তিনজন প্রার্থীর মধ্যে দুজন প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার প্রতীক বরাদ্দের দিন ছিল। সুতরাং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সুফি কামাল মিন্টু চেয়ারম্যান হবেন। এঘোষনা বৃহস্পতিবার দেয়া হবে।
জানা গেছে, কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ ইউপির চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি ফরহাদ মিয়া চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার কারনে জুন মাসের শেষের দিকে কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ ইউপির উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী গত ৪ জুলাই মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার দিনধার্য ছিল। ওই দিন তিনজন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন। গত ৫ জুলাই মনোনয়ন ফরম যাচাই বাছাই হয়। যাচাই বাছাইয়ে তিনজন প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন এবং সবাইকে বৈধ বলে ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ১০ জুলাই বুধবার মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল।
এদিকে গত ৮ জুলাই কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ ইউপির উপনির্বাচন কে সামনে রেখে বর্ধিত সভার আয়োজন করে ইউপি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন। সে সভায় মোসলেম আলী প্রামানিক প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে সুফি কামাল মিন্টু কে দলীয় ভাবে সমর্থন দেয়া হয়। অবশ্য সে সভায় উপস্থিত ছিলেন না তরুন উদীয়মান প্রার্থী মাসুদ করিম। তিনি তফসিল ঘোষণার আগে দোয়া ও সমর্থন প্রত্যাশী হিসেবে পোষ্টার লাগান ইউপি এলাকা জুড়ে। পোষ্টারে নেতাদের ছবি ব্যবহার করায় বর্ধিত সভায় তাকে প্রতারক হিসেবে আখ্যা দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সহ নেতারা।
সুত্র জানায়, মিন্টু কে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান করতে মরিয়া হয়ে পড়েন উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। নানা ভাবে হুমকি ধামকি দেয়া শুরু করেন মাসুদ করিমকে। কারন মোসলেম আলী প্রামানিক প্রত্যাহার করেছে, আর মাসুদ করিম দলের কেউ না, সে কিসের বলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এমন নানা প্রশ্ন তুলেন নেতারা। বুধবার সকালের দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন তার মোটরসাইকেলে করে মাসুদ করিম কে নির্বাচন অফিসে নিয়ে যায়। এভাবে প্রার্থী তা প্রত্যাহার হওয়ায় ইউপি বাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন বিরাজমান, উঠেছে সমালোচনাও, কেউ বলছেন আওয়ামী লীগ কি কামারগাঁ ইউপি তে দেওলিয়া হয়ে পড়েছে।
অবশ্য মাসুদ করিম কে উপজেলা দেখে প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এসব নিয়ে পরে কথা বলব।
মাসুদ করিমের বেশ কিছু অনুসারীরা জানান, গত মঙ্গলবার রাতে এমপি ডেকে পাঠিয়ে, প্রায় দুই তিন ঘন্টা ধরে বুঝিয়ে প্রত্যাহার করার জন্য বলেন। সে জন্য প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :