মাদারীপুরে বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে জব্দ হওয়া যানবাহন নিলামের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। পুলিশ লাইন, থানা ও আদালত পাড়ায় বছরের পর বছর যানবাহনগুলো অলস পড়ে থাকায় মূল্যবান যন্ত্রাংশ উধাও হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। জনস্বার্থে দ্রুত মালিকানাবিহীন যানবাহন নিলামকরা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জেলা পুলিশের দাবি, জব্দ যানবাহনের তালিকা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জেলার শিবচর থানা কমপ্লেক্সে সরেজমিনে দেখা যায়, ভেতরে সারি সারিভাবে রাখা আছে জব্দ করা বিভিন্ন যানবাহন। ঘাস আর লতাপাতায় ঢেকে আছে কোনোটি, আবার যন্ত্রাংশবিহীন কোনোটি, যা উধাও হয়ে গেছে।
বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে জব্দ হওয়া এসব যানবাহন নষ্ট হচ্ছে অযত্ন-অবহেলায়। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার পাশাপাশি চোরদের তৎপরতায় অনেক গাড়িরই এখন কঙ্কালদশা। চাকার হাওয়া চলে যাওয়ার কারণে বেশকিছু গাড়ি বসে গেছে মাটিতেও।
একই অবস্থা সদর মডেল থানার ভেতরেরও। বিভিন্ন মামলা আর অভিযানে জব্দ হওয়া এসব যানবাহনের মালিকানা না থাকায়, থানার ভেতরেই পড়ে থাকছে বছরের পর বছর। নিলাম হলে একদিকে স্বল্পদামে এসব যানবাহন কেনা সম্ভব জনসাধারণের; এতে সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে মত আইনজীবীদের।
তবে জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, মাদারীপুর সদর মডেল থানা, শিবচর, কালকিনি, রাজৈর ও ডাসার থানা পুলিশ লাইন, ট্রাফিক পুলিশ ও আদালতপাড়ায় থাকা বিভিন্ন মামলায় প্রায় ২শ মালিকানাবিহীন মোটরসাইকেল জব্দ কর হয়েছে। এছাড়া প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও ট্রাকও রয়েছে জব্দ হওয়া এসব যানবাহনের তালিকায়।
মাদারীপুর আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এইচএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘জব্দ হওয়া যানবাহনগুলো নষ্ট হচ্ছে। আদালতের মাধ্যমে নিলাম হলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। অর্থনৈতিক অবস্থা গতিশীল হবে। দীর্ঘদিনেও নিলাম না হওয়ায় দেশের সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে সরকার একটি মোটা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জব্দ হওয়া গাড়ির তালিকা প্রস্তুত করা হয় পুলিশের মাধ্যমে। এর মধ্যে মালিকাবিহীন যানবাহনগুলো বিক্রয়ের জন্য নিলামে দেয়া উচিত।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. কামরুল ইসলাম জানান, এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা চলমান থাকায় নিলামেও তোলা যায় না। তবে, মালিকানাবিহীন যানবাহনগুলোর নিলামের আবেদন চেয়ে বিজ্ঞ আদালতের কাছে আবেদন করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের সিদ্ধান্তে নেয়া হয় আইনি ব্যবস্থা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :