সরকারি কর্ম কমিশনসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ১৭ জনের মধ্যে একজনের বাড়ি ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায়। নাম মো. জাহিদুল ইসলাম। জাহিদুলের প্রতারণা থেকে রেহায় পায়নি তার নিজ এলাকার সাধারণ চাকরিপ্রত্যাশীরাও। তার আটকের খবর নিজ এলাকায় জানাজানি হলে প্রতারণার শিকার চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে আনন্দের পাশাপাশি ক্ষোভও দেখা গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর ইউনিয়নের চর কোড়ালমাড়া ইয়াসিনগঞ্জ বাজারসংলগ্ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মান্নান মাস্টার বাড়ির আবদুল লতিফের ছোট ছেলে জাহিদুল ইসলাম।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চার বোন তিন ভাইয়ের মধ্যে জাহিদুল সবার ছোট। ছোট বেলায় জাহিদুল ইসলাম প্রথমে লালমোহন উপজেলার রায়চাঁদ এলাকার একটি মাদরাসায় হাফেজি পড়েছেন। কিন্তু পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে হাফেজি পড়াশুনা শেষ করতে পারেননি। পরে লালমোহনের ডাওয়ারী মাদরাসা থেকে দাখিল ও লালমোহন কামিল মাদরাসা থেকে আলিম পাস করেন। বর্তমানে লালমোহন কামিল মাদরাসায় ফাজিল তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত জাহিদুল।
জাহিদুলের বড় বোন মায়ানুর বেগম বলেন, জাহিদুল আমার ছোট ভাই। পড়াশুনা করার জন্য দুই বছর আগে ঢাকায় পাঠাই। ঢাকায় মিরপুর এলাকায় থেকে পড়াশুনার পাশাপাশি ছোট খাটো ব্যবসা কারতো শুনেছি। পরে কিছু দিন আগে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে শুনতে পাই আমার ছোট ভাই জাহিদুল ইসলাম প্রশ্নফাঁস চক্রের সাথে জড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, জাহিদুল ইসলাম এলাকায় জুয়েল নামে পরিচিত। দুই বছর ধরে পরীক্ষায় পাস ও চাকরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন সময় এলাকার মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে। বাড়িঘরের অবস্থা নাজুক হলেও এলাকায় জাহিদুলের চলাফেরা ছিলো রাজকীয়ভাবে। তাঁর কথায় মন সহজে গলে যেত সাধারণ চাকরিপ্রত্যাশীদের। এই সুযোগে তিনি পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়া ও চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সাধারণ চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে। তার আত্মীয়-স্বজনও তার প্রতারণা হাত থেকে রেহায় পায়নি বলে জানা যায়। বিভিন্ন সময় তার ফেসবুকে আইডি থেকে চাকরি পাইয়ে দেয়া লোভনীয় পোস্ট করে প্রলোভন দেখাতো। তবে পাওনাদারদের ভয়ে এক বছর ধরে ঠিকমতো এলাকায় ফিরতে পারেনি জাহিদুল।
জানতে চাইলে প্রতিবেশী শাহাবুদ্দিন বলেন, জাহিদুল ইসলাম ওরফে জুয়েল চাকরি দিবে বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের এ+ পাইয়ে দিবে বলেও টাকা নিয়েছে। তাই তাঁর গ্রেপ্তারে এলাকার অনেকেই আনন্দিত। টাকা ফেরত না পেয়ে আবুল কাশেম নামের এক ভুক্তভোগী মামলাও করেছেন জাহিদুলের নামে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, জাহিদুল এক বছর আগেও এলাকার মানুষজনকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন। চাকরী দিতে না পেরে তিনি এলাকা থেকে উধাও হয়ে যান। এখন আর প্রতারক জাহিদুল ইসলাম বাড়িতেও আসেন না। জাহিদুলের প্রতারণার শিকার ভোক্তভোগী পরিবারগুলি তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সরকারের নিকট।’
একুশে সংবাদ/ এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :