বরগুনার আমতলী উপজেলায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে আনন্দে ভাসছে সুবিধাভোগিরা। অসচ্ছল দরিদ্র ও
গৃহহীন পরিবারগুলোর বাসস্থান নিশ্চিত করতে দৃষ্টিনন্দন বাড়িগুলো দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। অসহায় পরিবারগুলো পেয়েছে তাদের ঠিকানা।যাদের মাথা গোঁজার ঠাই ছিলো ঝুঁপড়ি ঘর তারা এখন পাকা ঘরে জীবন যাপনকরছেন। অসহায় পরিবারগুলো কেউ থাকতেন অন্যের জমিতে কেউবা খাসজমিতে, কেউবা খোলা আকাশের নিচে । এসকল মানুষদের করা হয়েছে ঘরের মালিক।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আশ্রয়ণ- ২ প্রকল্পের আওতায় সরকারি খাস জমিতে এসব ঘর তৈরি করা হয়েছে। এর প্রতিটি ঘরে দুটি শয়নকক্ষ ছাড়াও রয়েছে একটি করে বারান্দা, বাথরুম ও রান্নাঘর। বাড়ির মালিকদের জমির দলিল, নামজারি, জমির মালিকানা কবুলিয়ত নামা করে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ঘরে পানির জন্য নলকূপ বসানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে প্রতিটি ঘরে
বিদ্যুৎ সংযোগ।
উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নে ৬৪টি ঘর, চাওড়া ইউনিয়নে ১৫৭টি, আমতলী সদর ৩৭ টি, গুলিশাখালী ১৫৫ টি, আঠারগাছিয়া ইউনিয়নে ৭৬টি, কুকুয়া ইউনিয়নে ৬৪টি, আড়পাঙ্গাশিয়া ইাউনিয়নে ১০৫টি ও আমতলী পৌরসভায় ১১০টি ঘরসহ সব মিলিয়ে মোট ৭৬৭ টি ঘর দেওয়া হয়েছে নির্বাচিত সুবিধাভোগিদের।
ঘর নির্মাণ কাজের শুরু থেকে কড়া নজর রাখেন আমতলী উপজেলা প্রশাসন। ভূমিহীন এবং গৃহহীন মানুষেরা যাতে সুন্দর ভাবে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পান সেজন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি তারেক হাসান । সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. জামাল হুসেইন ইউপি চেয়ারম্যান বৃন্দ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলীরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়ন গুলিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের সুবিধাভোগি ঘটখালীর লিপি বেগম হাসিমাখা মুখে রান্নাবান্নার কাজ করছে। আগে যে অন্যের জমিতে ঝুঁপড়ি ঘরে রাত্রিযাপন করতো বিষন্ন মুখে সে এখন হাসিমুখে নিজ ঘরে মহাসুখে জীবনযাপন করছে। অন্যের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঝিয়ের কাজ করে কোনরকম জীবন বাঁচাতো সে। শীত-বর্ষায় কোনরকম বেঁচে থাকাই যেন কাম্য।
লিপির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মুই কোনদিন চিন্তা ও করি নাই যে মুই পাকা ঘরে থাকবো। কোনদিন এরকম একটা ঘরের মালিক হবো। শেখ হাসিনা আমাকে পাকা ঘরে থাকের কপাল করে দিছে আল্লাহ শেখ হাসিনাকে হাজার বছর বাঁচাইয়া রাখুক। আমি
যতদিন বাঁইচ্যা থাকবো ততদিন শেখের মাইয়ার জন্য দোয়া করবো।
আমতলীর চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান খান বাদল বলেন, আমার ইউনিয়নের গরীব অসহায়দের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দিতে পারায় আমার সত্যিই খুব আনন্দ লাগছে। আমার এলাকার
লোকেরা শান্তিতে থাকতে পারবে এটাই আমার কাছে সব থেকে বড় পাওয়া।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে চেষ্টা করেছি যাতে গৃহহীনরা তাদের স্বপ্নের ঘরে উঠতে পারে। সুবিধাভোগিদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর তুলে দিতে পারায় সম্পৃক্ত সকলকেই কৃতজ্ঞতা জানাই।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :