সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাহুকা কলেজে ৭ জন প্রভাষক অবৈধ নিয়োগের মাধ্যমে সভাপতি ও ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সরকারি বেতন উত্তোলন করে আসছে।
প্রভাষকরা হলেন, হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক সমর কুমার মন্ডল, ইসলামের ইতিহাসের প্রভাষক জুলফিকার আলী ভুট্টো, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক মোছাঃ বকুল খাতুন, সাচিবিক বিদ্যার প্রভাষক মিজানুর রহমান, জীববিজ্ঞানের প্রভাষক বাচ্চু কুমার ঘোষ, ব্যবসায় উদ্যোগের প্রভাষক মোঃ আব্দুল হালিম, পদার্থবিজ্ঞানের প্রভাষক ফারহানা আফরোজ।
উল্লেখিত প্রভাষকদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের স্মারক নং ৭জি১০৩৮ (ক-০৩)/০৬/১১৫৩৬/৩ এর ম্মারক অনুযায়ী গত ০২/০৩/২০০৮ সালের সহকারী পরিচালক বেনজীর আহাম্মেদের স্বাক্ষরিত চিঠিটি থেকে জানা যায়- উল্লেখিত ব্যক্তিদের মাস্টার্স পাশের সমমান সনদ না থাকায় সকলকে এমপিওভুক্ত করা যাচ্ছে না মর্মে চিঠি প্রেরণ করেন। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির বলে এখনও এই কলেজে চাকরি করে বেতন উত্তোলন করে আসছে।
পুনরায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ আমিনুল ইসলামের নিকট অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত প্রভাষকদের বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ প্রদান করেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ডেপুটি কালেক্টর মোহাম্মদ এনামুল আহাসানের তদন্ত প্রতিবেদন স্মারক নং জেপ্রসি/এসএ/বিবিধি ২০১১-১৬৪২ এর তদন্ত প্রতিবেদন এর (ঘ) অনুচ্ছেদ হতে বাহুকা কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মাদ আব্দুল হালিমের স্বীকার উক্তিতে উল্লেখিত প্রভাষক নিয়োগে সভাপতি ও ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষর জালিয়াতি এবং বিজ্ঞপ্তি তারিখ পরিবর্তন করে অবৈধ নিয়োগ প্রদানের তথ্য উঠে আসে।
এছাড়া বাহুকা কলেজের সাবেক ভারপাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মাদ আব্দুল হালিম উল্লিখিত প্রভাষকদের নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ শিকার করে স্বহস্তে লিখিত স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।
একাধিক কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনে ৭ জন প্রভাষকের নিয়োগ অবৈধ হলেও অদৃশ্য কারণে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ বৈধ করে সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আসছে।
৭ জন প্রভাষক দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে অবৈধ নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় জনপ্রতি ৫০ লক্ষ করে টাকা উত্তোল করেছে। যা ১৪ বছরে গড় টাকা দাঁড়িয়েছে প্রায় সারে ৩ কোটি টাকা।
এছাড়াও বাহুকা কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিধি বহির্বিভূতভাবে অর্থের বিনিময়ে জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে বাহুকা কলেজের বাংলা বিষয়ের প্রভাষক আশুতোষ কুমার সাহা তথ্যবহুল নানা অভিযোগ ৮টি দপ্তরে প্রেরণ করেছেন।
বাহুকা কলেজের বাংলা বিষয়ের প্রভাষক আশুতোষ কুমার সাহা বলেন, আমি সংখ্যালঘু হওয়ায় আমার উপর জোর ও অনিয়ম করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে আমাকে পদোন্নতি দিচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ বেসরকারি মাধ্যমিক-৩ বাংলাদেশ সচিবালয়ের ২৭ শে জুন ২০২২ খ্রিস্টাব্দের পরিপত্র অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রাপ্য হই কিন্তু অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম টাকার বিনিময়ে আমাকে জ্যেষ্ঠতা না দিয়ে অন্যদের প্রদান করছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। অধিকারে প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন অধিদপ্তরে আমি অভিযোগ প্রদান করেছি আশা করি আমি অভিযোগের ভিত্তিতে আমার অধিকার ফিরে পাবো।
বাহুকা কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির তালিকায় কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না। অভিযুক্তরা আপনাদের ভ্রান্ত ধারণা দিচ্ছে।
একুশে সংবাদ/ এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :