আজ বিশ্ব বাঘ দিবস। বাঘের আবাস রক্ষা ও সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ২৯ জুলাই পালিত হচ্ছে এই দিবসটি। এ বছর বাংলাদেশে দিবসটির অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাঘশুমারির ফলাফল প্রকাশ। কিন্তু আন্দোলন ও কারফিউর কারণে সব কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় আগামী মাসে ফল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে বন কর্মকর্তারা।
প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের একটি বড় অংশ দখল করে আছে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী। এর মধ্যে অন্যতম বেঙ্গল টাইগার বা বাংলার বাঘ। কিন্তু শিকারিসহ নানা অব্যবস্থাপনায় শতাব্দীজুড়ে কমেছে বাঘের সংখ্যা। বাঘ সংরক্ষণ ও সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।
উজ্জ্বল বর্ণ, আকার ও স্বভাবের কারণে বাংলার বাঘের খ্যাতি পৃথিবীব্যাপী। সাহসিকতা ও শক্তিমত্তার কারণে বাংলাদেশের জাতীয় পশুর স্বীকৃতি পেয়েছে বাঘ। রাজসিক এই প্রাণীর আবাসস্থল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সুন্দরবনে।
একসময় দেশের অধিকাংশ বনে বাঘের দেখা মিললেও এখন তা শুধুমাত্র সুন্দরবনেই সীমাবদ্ধ। শাখা-প্রশাখার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য নদী ও খালে পরিপূর্ণ সুন্দরবনের অন্যতম সদস্য বাংলার বাঘ। এদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ১৩টি দেশ। তবে চোরাশিকার, আবাসস্থল ধ্বংস, খাদ্যাভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গত ১০০ বছরে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা কমেছে ৯৫ শতাংশ।
বিপন্ন এই প্রাণী সংরক্ষণে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ বছর মেয়াদী দুটি টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান ২০০৯ থেকে ২০১৭ এবং ২০১৮ থেকে ২০২৮ প্রণয়ন করেছে সরকার। বন বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার যৌথ উদ্যোগে চলছে বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্প। বাঘের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুন্দরবনে চালু হয়েছে স্মার্ট পেট্রোলিং। বিশেষ ক্যামেরা ট্র্যাপ পদ্ধতিতে নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে বাঘশুমারি। এই পদ্ধতিতে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা গণনা করা হয় ১শ ১৪ টি।
২০১০ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রথম বাঘ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ নিজ নিজ দেশে বাঘের সংখ্যা ১২ বছরের মধ্যে দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা সামান্য বাড়লেও এখনও দূরে আছে সে লক্ষ্য থেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বনের আয়তন ও বাঘের খাবারের পরিমাণ বিবেচনায় নিলে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ বা তারও বেশিতে উন্নীত করা সম্ভব।
একুশে সংবাদ/চ.আ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :