AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
কোটা সংস্কার আন্দোলন

ভাইকে আনতে চিকিৎসক ভাইয়ের মৃত্যু


Ekushey Sangbad
সাব্বির হোসেন, পলাশ, নরসিংদী
১২:৪৪ পিএম, ২৯ জুলাই, ২০২৪
ভাইকে আনতে চিকিৎসক ভাইয়ের মৃত্যু

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে মাদরাসা পড়ুয়া ভাইকে আনতে গিয়ে ঢাকার আজমপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে গত ১৮ জুলাই নিহত হয়েছেন নরসিংদীর রায়পুরার বাসিন্দা চিকিৎসক সজিব সরকার (৩০)। ওইদিন রাতেই উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে স্বজনরা তার লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরদিন তার মরদেহ নিজ এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন সজিবের মৃত্যুতে এখন অথৈ সাগরে ভাসছে পুরো পরিবার।

সজিব সরকার রায়পুরার মির্জানগর ইউনিয়নের মেঝেরকান্দি গ্রামের মো হালিম সরকারের ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণ্যবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের লেকচারার ছিলেন। বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতেন। তিনি তিন ভাই এক বোনের মাঝে সবার বড় ছিলেন।

নরসিংদীর ভেলানগরে ভাড়া বাসায় থাকে এই পরিবার। রোববার (২৮ জুলাই) বাসায় গিয়ে দেখা যায়, ছেলেকে হারিয়ে মা ঝর্ণা বেগম (৫৬) এখন পাগলপ্রায়, অসুস্থ হয়ে অক্সিজেন নিচ্ছে। ছেলের স্মৃতিচারণ করে বিলাপ করে মুরছা যাচ্ছেন। এসময় তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ। সজিব সবসময় আমাকে ছোট্ট সন্তানের মত আগলে রাখতো। আমিসহ সকলের খরচ যোগাতো।

১৮ জুলাই বেলা ১১টায় বাসা থেকে ছোট ছেলেকে আনতে বের হন। বেলা সাড়ে ৪ থেকে ৫ টার মধ্যে আজমপুর পৌঁছে ফোনে কথা হয়। রাত ১ টা পর্যন্ত ছেলের অপেক্ষায় বসে ছিলাম। আমাদের যা ছিলো সব ছেলেকে ডাক্তার বানাতে ব্যয় হয়েছে। সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব। আমার ছেলে হত্যার বিচার কি ভাবে পাবো সেটাই চাইবো। সবাই যাতে জানে সজিব ডাক্তার নির্দোষ হয়ে মারা গেছে। সজিব যেনো আজীবন সবার মাঝে বেঁচে থাকে এমন কিছু একটা নামকরণ করা হউক।

ভাই আব্দুল্লাহ বলেন, এর আগের সপ্তাহে ভাই মাদরাসায় আসে। ওই সময় তার সাথে সর্বশেষ দেখা হয় এবং বলে ১৮ তারিখ বৃহস্পতিবার মাদরাসা ছুটি হলে এসে আমাকে নিয়ে যাবে। ওই দিন বিকেলে তিন বার ভাইকে ফোন দিয়ে না পেয়ে ব্যাগ নিয়ে ভাইয়ের অপেক্ষায় বসে থাকি। রাত নয়টায় হাসপাতালে এসে ভাইয়ের লাশ দেখতে পাই।

চিকিৎসকের বাবা মো হালিম সরকার (৫৮) বলেন, ছেলেকে খুব কষ্ট করে ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত পড়াশোনা করাই। গত ২০২০ সালে টঙ্গীর বেসরকারি তাইরুন্নেছা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক হন। তাকে চিকিৎসক বানাতে গিয়ে দিতে হয়েছে সর্বত্র, ঋণে জর্জরিত। ইদানীং সে ঋণগ্রস্ত পরিবারের হাল ধরেন। তার উপার্জনে অসুস্থ মা‍‍`র চিকিৎসা ও ভাই বোনের পড়াশোনা এবং সংসার চলতো দেয়া হতো ঋণ।

স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, সজিব ডাক্তার হলয়ে সময় পেলেই এলাকায় এসে বিনামূল্যে মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতেন। তার মৃত্যু মেনে নেয়ার নয়। খুব ভালো মনের পরহেজগার মানুষ ছিলেন।

 

একুশে সংবাদ/সা.আ   

Link copied!