রাজবাড়ী জেলার কালুখালীতে গড়াই নদীর সরকারী বালু মহাল থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত বৈশাখ থেকে প্রকাশ্যে দিবালোকে বালু উত্তোলন করে শত শত ট্রাকে বিক্রি করলেও জানে না প্রশাসন। ট্রাকে বালু নেওয়ার ফলে সড়কের উপর দিয়ে বালুর স্তুপের সৃষ্টি হয়েছে। গড়াই নদীর পাড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এলাকাবাসী জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের পাতুরিয়া গড়াই নদীর বালু মহাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিক্রি করা হয়। চলতি ১৪৩১ বাংলা সনের ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হলেও তার কেউই ইজারা নেয়নি। ফলে পহেলা বৈশাখ থেকে অদ্যবর্দী মৃগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম.এ মতিন এবং সাওরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম আলীর নেতৃত্বে ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব বালু শত শত ট্রাকের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। ৪ মাস ধরে কয়েক কোটি টাকার বালু প্রকাশ্যে বিক্রি করলেও প্রশাসন কিছুই জানেন না।
অবৈধ বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকারী ভাবে ক্রয় না করেই বালু উত্তোলন করছেন দুই চেয়ারম্যান। বিষয়টি আমরা প্রশাসন সহ সকলকে ম্যানেজ করেই করছি।
সাওরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলী বলেন, আমি আর মতিন চেয়ারম্যানই নয় আরো অনেকেই এ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত। গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত বালু উত্তোলনে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া ছিল। এখন মতিন চেয়ারম্যানের নামে লাইসেন্স রয়েছে তাতে ইজারা নেওয়া হবে। তবে তিনি বালু মহাল না ক্রয় করেই পহেলা বৈশাখ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করেন।
মৃগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম. এ মতিন প্রথমে বালু উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন যে, আমাদের ভাই ব্রাদার কাটছে, আমিও তাদের সাথে আছি। এলাকার এসে স্বাক্ষাত করেন। তবে অবৈধভাবে গত ৪ মাস ধরে বালু উত্তোলন কিভাবে করছেন জানতে চাইলে প্রশাসনের সাথে কথা বলতে বলেন।
এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহুয়া আফরোজ বালু উত্তোলনের বিষয়টি কিছুই জানেন না জানিয়ে বলেন, আমি এখনই বালু উত্তোলন বন্ধ করছি। এ বালু মহালটি এখনো বিক্রি হয়নি।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, কালুখালী উপজেলার পাতুরিয়া সরকারী বালু মহালটি এখানো কাউকে ইজারা প্রদান করা হয়নি। যদি কেউ বালু উত্তোলন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :